দেখতে দেখতে ভ্যাটিকানের সিংহাসনে চার বছর কেটে গেল পোপ ফ্রান্সিসের। ক্যাথলিক দুনিয়ার ঈশ্বরের ভূমিকায় পূর্বসূরিদের চেয়ে বেশ কিছুটা ব্যতিক্রমী পোপ ফ্রান্সিস। বিজ্ঞানের সঙ্গে তার সংঘাত নেই, সমকামিতাকে তিনি পাপ বলে মানেন না, বিধর্মী বা নাস্তিকদের প্রতিও কোনও ঘৃণা পোষণ করেন না তিনি।
পোপের মতে, ঈশ্বরে অবিশ্বাসীদের জন্যও খোলা রয়েছে স্বর্গের দরজা। দুর্নীতিগ্রস্ত ক্যাথলিকদের চেয়ে সৎ নাস্তিক যে অনেক ভালো, সে কথা একাধিকবার তিনি বলেছেন। তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন চার্চের একাংশের দুর্নীতির কথা। প্রকাশ্যে তীব্র সমালোচনা করেছেন নাবালকদের উপর খ্রিস্টীয় যাজকদের একাংশের যৌন নিপীড়নের। এই অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির পক্ষেও তিনি মত দিয়েছেন।
২০১৪ সালে পোপ ঘোষণা করেন, ঈশ্বর কোনও জাদুদণ্ড হাতে বাজিকর নন। বিগ ব্যাং থিওরি ও বিবর্তনবাদের মতো বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সত্যতা মেনে নিয়ে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ধর্মের সঙ্গে বিজ্ঞানের কোনও সংঘাত নেই, বরং ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, তার বক্তব্যের মাধ্যমে ক্যাথলিক চার্চের পূর্বসূরিদের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। ইতিহাস অবশ্য বলে, তার দৃষ্টিভঙ্গিতে পোপ দ্বিতীয় জন পলের ছায়া উপস্থিত।
বিশ্বের সাম্প্রতিক শরণার্থী সমস্যা নিয়ে প্রবল উদ্বিগ্ন পোপ। তিনি বিশ্বাস করেন, দেওয়াল গেঁথে উদ্বাস্তুদের ঠেকানোর নীতি ভ্রান্ত। ভিটেছাড়াদের আশ্রয় দিতে বিশ্ব নেতাদের কাছে বার বার তিনি আবেদন জানিয়েছেন। বলেছেন, দেওয়ালের বদলে গড়ে তোলা হোক একের পর এক সেতু। এক দেশের মানুষ পরম নিশ্চিন্ত আশ্রয় পাক অন্য রাষ্ট্রে।
সংবাদমাধ্যমকে আরও বেশি সচেতন হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। সোশ্যাল মিডিয়ার রমরমার যুগে সাংবাদিকদের দায়িত্ব যে অনেকাংশেই বেড়েছে, সে সম্পর্কে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, খবর যাচাই না করে যেন কখনও প্রচার করা না হয়। ভুয়া খবর প্রচারের জেরে যে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে, সেই আশঙ্কার ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমকে তিনি সাবধান হতে পরামর্শ দিয়েছেন।
সূত্র : এই সময়
বিডি প্রতিদিন/১৬ মার্চ, ২০১৭/ফারজানা