ধর্ষণে বাধা দিয়েছিলেন কিনা? পা জোড়া করে রেখেছিলেন কি? ধর্ষিতাকে এমন প্রশ্ন করে এবার বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির এক বিচারক।
এই কর্তব্য জ্ঞানহীন প্রশ্নের কারণে তিন মাসের জন্য বেতনহীন সাসপেনশনের মুখে পড়তে পারেন তিনি।
বেশ কিছু দিন ধরেই জন রুসো নামের এই বিচারকের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ জমা পড়ছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নয় জনের একটি প্যানেল তৈরি করা হয়েছিল। সম্প্রতি সেই প্যানেল ৪৫ পাতার রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, আদালতে বসে কী ধরনের আপত্তিজনক মন্তব্য করতেন এই বিচারপতি।
রিপোর্টে ২০১৬ সালের একটি মামলার উল্লেখ করা হয়েছে। এক নারী তার সাবেক লিভ-ইন পার্টনারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন। সেই মামলার শুনানিতেই বিচারক নারীকে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন। প্রথমেই জিজ্ঞাসা করেন, “আপনার আপত্তি সত্ত্বেও কেউ আপনার সঙ্গে সহবাস করতে চাইছে। তখন আপনি কী করবেন?”
রিপোর্ট অনুযায়ী, নারী উত্তর দেন, “না, না, বলে চেঁচাব। হামলাকারীকে মারব। ছুটে পালানোর চেষ্টা করব।”
এই উত্তরে সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি। ফের জিজ্ঞাসা করেন, “আর কিছু করবেন না? আর কিছু করতে জানেন না?”
ওই নারী আমতা আমতা করে উত্তর দেন, “না, এ-টুকুই...।”
বিচারক তখন বলেন, কেন, গোপনাঙ্গকে কীভাবে রক্ষা করতে হয় জানেন না?
বিচারক আরও বলেন, শরীরের অঙ্গগুলোকে চেপে রেখেছিলেন? পা জোড়া করে রাখেননি? পুলিশকে ডেকেছিলেন? আপনি কি এই কাজগুলোর কোনোটি করেছেন?
রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিচারকের এই মন্তব্যে দৃশ্যতই বিচলিত হয়ে পড়েন ওই নারী। প্যানেলের সদস্যদের কথায়, “একটা খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গিয়ে ওই নারী বিচারের আশায় আদালতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে সহমর্মিতা তো পেলেনই না, উল্টো নতুন করে অস্বস্তিজনক পরিস্থিতিতে পড়লেন। এটা খুবই দুঃখের।”
বিচারক রুসোর অবশ্য দাবি, নারীকে অপমান করার কোনো উদ্দেশ্য তার ছিল না। হামলার গুরুত্ব বুঝতেই তিনি ধর্ষিতাকে এ ধরনের প্রশ্ন করেছিলেন।
সূত্র: এবিসি নিউজ
বিডি প্রতিদিন/কালাম