আমন্ত্রণপত্র গ্রহণের একদিন পরেই মতবদল করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে বের হওয়ার সময় দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকার কথা জানিয়েছিলেন মমতা।
তিনি বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকাটা সাংবিধানিক রীতি। সংবিধানের নিয়ম মেনে অনুষ্ঠান, তাই সেখানে উপস্থিত থাকাটাও সাংবিধানিক সৌজন্য। কয়েকজনের সাথে কথা হয়েছে। আমরা সবাই মিলে ঠিক করেছি ওই অনুষ্ঠানে থাকবো।’
হঠাৎ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে বুধবার বিকালে মমতা জানালেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয়বারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকছি না। তার অভিযোগ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে। রাজনৈতিক সহিংসতায় পশ্চিমবঙ্গে ৫৪ জন বিজেপি কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে বিজেপি। এতে তার সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করছে বলেও অভিযোগ করেছেন মমতা।
এদিন দুপুর ২ টা নাগাদ ট্যুইট করে মমতা জানান, ‘অভিনন্দন, নতুন প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদি জি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে সাংবিধানিক আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবো। কিন্তু গত এক ঘণ্টা আগে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানতে পারলাম যে বিজেপি দাবি করছে যে, রাজনৈতিক সহিংসতায় বাংলায় ৫৪ জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এটা পুরোপুরি অসত্য। এখানে কোনো রাজনৈতিক হত্যা হয়নি। এই মৃত্যুগুলোর পেছনে ব্যক্তিগত শত্রুতা, পারিবারিক বিবাদ কিংবা অন্য কোনো বিবাদ থাকতে পারে। এর সাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের কাছে এমন কোনো তথ্য নেই। তাই, আমি দুঃখিত, নরেন্দ্র মোদি জি, এই ঘটনা শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির না থাকতে আমাকে বাধ্য করছে। এই অনুষ্ঠানটি গণতন্ত্র উদযাপনের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানটি কোনো এক রাজনৈতিক দলের স্বার্থ চরিতার্থ করা বা রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য নয়। আমাকে ক্ষমা করবেন।’
এদিকে মমতার এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় জানান, ‘আমাদের কর্মীরা, তাদের পরিবারের লোকেরা শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আসতে চেয়েছে। তাতে যদি মমতা দিদির সমস্যা হয়-সেখানে আমাদের কিছু করার নেই।’
উল্লেখ্য, গত ছয় বছরে বাংলায় রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে যে সকল বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।এদিকে সেই সমস্ত পরিবারের সদস্যদের দিল্লিতে মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যেই তাদের অনেকেই দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনাও দিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন