কয়েক দিন আগেই ইতালিকে অনেকটা পেছনে ফেলে দিয়েছে ট্রাম্পের দেশ। করোনাভাইরাসে ২৬ হাজারের উপরে মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। বেতন পাচ্ছেন না লাখ লাখ মানুষ। তার মধ্যেও স্বমেজাজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি ফের আক্রমণ করেছেন সংবাদমাধ্যমকে। তার অভিযোগ, করোনা-সঙ্কটের মধ্যে তার প্রশাসন পুরোপুরি ঠিক কাজ করছে। অথচ সংবাদমাধ্যম তাকে কৃতিত্ব দেওয়ার প্রয়োজনই বোধ করছে না।
শুধু তাই নয়, প্রচারধর্মী একটি ভিডিও দেখিয়ে ট্রাম্প মানুষকে আবার বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও করেছেন। গোড়ার দিকে তিনি সংক্রমণে একেবারেই গুরুত্ব দেননি। উল্টে বলেছিলেন, কোনো ‘মিরাক্ল’ ঘটবে, ভাইরাসও সরে যাবে। অথচ এ বার তিনি নিজের বলা সেই কথাই প্রকাশ্যে উড়িয়ে দিতে নিজের উপদেষ্টা এবং মহামারী বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফসিকে ব্যবহার করেছেন। ভাবটা এমন, আগের কথাগুলো তিনি বলেনইনি।
পাশাপাশি ট্রাম্প দাবি করেছেন, তার দেশের অর্থনীতি সময়ের আগেই ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু কী ভাবে, তার ব্যাখ্যা দেননি প্রেসিডেন্ট। আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশে এখন সংক্রমণের হার ক্রমশ বাড়ছে অথবা শীর্ষ ছোঁয়ার অপেক্ষায়-অথচ প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি, প্রাদেশিক গভর্নররা স্কুল, রেস্তোরাঁ, দোকান বন্ধ করে রাখলেও অর্থনীতিকে সচল করতে সেগুলি খুলে দিতে বাধ্য করতে পারেন তিনি। কিন্তু আমেরিকার যা অবস্থা, তাতে মানুষ যদি বাইরে বেরোতে ভরসা না পান, তা হলে তাদের কী ভাবে বোঝাবেন প্রেসিডেন্ট? তারও কোনো ব্যাখ্যা নেই ট্রাম্পের কাছে। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সহমত নন নিউ ইয়র্কের ডেমোক্র্যাট গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো।
তিনি বলেছেন, ‘রাজা ট্রাম্পের’ নির্দেশ মানবেন না তিনি। করোনায় সব চেয়ে বিপর্যস্ত নিউ ইয়র্কে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৯৫ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে।
তবে ট্রাম্প টুইটে কুয়োমোর উদ্দেশে লিখেছেন, ‘‘উনি মনে হয় স্বাধীনতা চাইছেন। সেটা হবে না।’’ শুধু কুয়োমো নন, গভর্নরদের বেশির ভাগই বলেছেন, তারা তথ্য, বিজ্ঞান, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন। কোনো রাজনীতি দ্বারা চালিত হবেন না।
যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত হিসেবে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে মোট ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৮৬ জন। এরই মধ্যে প্রাণহানি ঘটেছে ২৬ হাজার ৪৭ জনের।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন