ফিলিস্তিনে ভয়াবহ আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে এই আগ্রাসন আরও জোরদার করেছে দখলদার বাহিনী। গত সোমবার থেকে গাজা সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলার পর ভূমি থেকেও আর্টিলারি ফায়ার ও ট্যাংক দিয়ে গোলা ছোড়া হয়।
শুক্রবার রাতে ৪০ মিনিটে গাজার ১৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে ৪৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র আভিচায় আদ্রায়ি শুক্রবার টুইটারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার ভোররাতে গাজায় এ ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইসরায়েলি সেনারা। এ হামলায় নিজেদের ঘরেই মারা যান তিন শিশুসহ এক মা। এছাড়া এক শরণার্থী শিবিরে এই বোমা হামলায় একই পরিবারের ছয় শিশুসহ নিহত হয় ৭ জন। ধ্বংসস্তূপ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন ৪০ মিনিটের এই হামলায়।
গত ৫ দিনে এই ইসরায়েলের এই আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৩ জনে। এর মধ্যে ৩৮ শিশু ও ২০ নারী রয়েছে।
শুক্রবারের এই হামলায় গাজার বিভিন্ন অ্যাপার্টমেন্ট, গাড়ি ও ভবনকে লক্ষ্য করে গোলা ছোড়া হয় বলে জানিয়েছেন আদ্রায়ি।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের ১৬০টি জঙ্গি বিমান ও ছয়টি বিমান ঘাঁটি থেকে এসব হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলায় বিমান ও পদাতিক বাহিনী অংশ নিয়েছে। তবে তারা গাজা সীমান্তে প্রবেশ করেনি।
শুক্রবার ভোরের ওই হামলার কয়েকটি ভিডিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটে প্রকাশ হয়।
ভিডিওতে ইসরায়েলি আর্টিলারি, গানবোট ও বিমান থেকে নিক্ষেপ করা গোলা ও বোমায় গাজার রাতের আকাশ জ্বলে উঠতে দেখা যায়। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে দেখা যায় বহুতল ভবন।
এসব বর্বরোচিত হামলার বিষয় শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “আমাদের হামলা অব্যাহত থাকবে। তারা আমাদের রাজধানীতে হামলা করেছে। তারা আমাদের শহরগুলোতে রকেট নিক্ষেপ করেছে। এর মাশুল তারা দিচ্ছে এবং দিতে থাকবে।”
শুক্রবার পাল্টা হামলা অব্যাহত রেখেছে হামাসও। পঞ্চম দিনের মতো গাজা থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপ করেছে হামাস। তবে এসবের অধিকাংশই ইসরায়েলের আয়রন ডোম সিস্টেমের মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়েছে।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিনিদের মধ্য চলমান সংঘাতকে ২০১৪ সালের পর সবচেয়ে বড় আকার নিয়েছে।
ফিলিস্তিনের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন মুসলিম বিশ্বের কয়েকটি দেশ।
মিশর, জর্ডান এবং লেবানন এগিয়ে এসেছে। তুরস্ক হুমকি দিয়েছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার বার্তা এসেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
এ নিয়ে কথা বলেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাভলুত চাভাসুগ্লু ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেনটো মারসাদি। সূত্র: আল আরাবিয়া, রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/কালাম