ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর বিষয়ে কূটনীতিক উপায়ে সমাধানের বিষয়ে জোর দেওয়া হবে। তবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে অন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। শনিবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকের পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি বারবার দিয়ে আসছে ইসরায়েল। ইরানকে চাপে ফেলতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্র সফররত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। বাইডেনের সাথে বৈঠকের পর ওয়াশিংটনে উচ্ছ্বসিত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি ব্যানেট বলেন, ইরান ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবস্থান প্রশংসনীয়। তিনি অঙ্গীকার করেছেন যে, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে দেবেন না।
স্থানীয় সময় শুক্রবার হোয়াইট হাউজে অনুষ্ঠিত ৫০ মিনিটের বৈঠকের পর অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, আমরা প্রথমে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাবো, দেখবো আমাদের করণীয় কী? কিন্তু যদি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় তবে আমরা অন্য ব্যবস্থা নিতেও আমরা প্রস্তুত।
এসময় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট বলেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র ইস্যুতে আপনার স্পষ্ট অবস্থানে আমি খুবই খুশি।
এদিকে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য হুমকি আখ্যা দিয়ে ইরানকে প্রতিরোধ করতে এরই মধ্যে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু করেছে নাফতালি বেনেট সরকার। যদিও সম্প্রতি ইসরায়েলের সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল আমোস ইয়াদলিন বলেছেন, সামরিক হামলা চালিয়ে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। তিনি মার্কিন নিউজ চ্যানেল সিএনবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন, ইসরায়েল যেমন ১৯৮১ সালে ইরাকের এবং ২০০৭ সালে সিরিয়ার পরমাণু স্থাপনা মাত্র একবার হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিল ইরানের পরমাণু স্থাপনা সেভাবে ধ্বংস করা সম্ভব নয়।
ইসরায়েলের এই সাবেক জেনারেল ও তেল আবিব ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ইরানের পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে ইরাক ও সিরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির তুলনামূলক পার্থক্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি অনেক বেশি সমৃদ্ধ ও বিভিন্ন স্থানে ছড়ানো ছিটানো। অথচ ইরাক ও সিরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি ছিল একটি স্থানে সীমাবদ্ধ। ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো বহু স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এগুলোর বেশিরভাগ পাহাড়ের নীচে ভূগর্ভে স্থাপন করা হয়েছে। ইসরায়েলের বা পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির সার্বিক চিত্র সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভ করা সম্ভব হয়েছে কিনা তা নিয়েও তিনি সংশয় প্রকাশ করেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার