ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের একটি রেল স্টেশনে গত শুক্রবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় ৫০ জনের বেশি নিহত হয়।
ডোনেটস্কের রাজধানী ক্রামাটোরস্কের ওই রেলস্টেশনে হামলায় ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করা হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
ক্লাস্টার বোমা কী?
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ‘ক্লাস্টার বোমা’র ব্যবহার নিষিদ্ধ। এটি এমন এক ধরনের বোমা যা একটি বিস্ফোরক, যা ছোট সাবমেরিনকে উড়িয়ে দিতে পারে। ক্লাস্টার বোমার সাহায্যে বৈদ্যুতিক পাওয়ার ট্রান্সমিশন, যুদ্ধ বিমানের রানওয়ে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। এই বোমার সাহায্যে রাসায়নিক বা জৈবিক অস্ত্র ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। ল্যান্ডমাইন ধ্বংস করতে এই বোমা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যানবাহন বা পরিকাঠামোর পাশাপাশি মানুষ হত্যা করা যায় এই বোমার মাধ্যমে। আক্রমণের সময় অনেকগুলি ছোটছোট বোমা একসঙ্গে ফেলা হয়। যা প্রতিপক্ষের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
ক্লাস্টার বোমার বিপদ
ক্লাস্টার বোমা প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। এগুলো হচ্ছে এমন এক ধরণের বোমা যা বিমান থেকে ফেলার পর মাঝ আকাশে ভেঙে বা খুলে যায় এবং সেখান থেকে শত শত ছোট ছোট বোমা বেরিয়ে মাটিতে পড়তে থাকে।
এগুলো যদি মাটিতে পড়ে না-ও ফাটে , তা হলেও তা বহু দিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকে এবং মৃত্যুর কারণ হয়।
কী প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি?
বিবিসি কয়েকজন সাংবাদিক যারা হামলার পর স্টেশন পরিদর্শন করেন তারা একটি ক্লাস্টার-মিনিশন ওয়ারহেড ব্যবহারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নিদর্শন বা বস্তু খুঁজে পেয়েছেন।
তাদের মতে, এর ফলেই একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে এবং ক্ষেপণাস্ত্রটি আক্রান্ত স্থানের চারপাশে টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
হামলার ওই স্থানে সোভিয়েত আমলের তোচকা-ইউ ক্ষেপণাস্ত্রের অবশিষ্টাংশ পাওয়া গেছে। এটি একটি স্বল্প-পাল্লার একক ওয়ারহেড ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা একটি ক্লাস্টার ওয়ারহেডের সাথে লাগানো যায় এবং ৫০টি পর্যন্ত ছোট ছোট বোমা বহন করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাপ্ত নির্দশনগুলো ক্লাস্টার অস্ত্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের ক্ষেপণাস্ত্র বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থ কৌশল বলেন, “নিদর্শনগুলো সোভিয়েত যুগের ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র ৯এন২৪-এর মতো একটি সাব-মিউনিশনের সাথে বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা তোচকা ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা বহন করা যায়।”
তবে বিবিসি এমন দাবি করলেও ইউক্রেন কিংবা রাশিয়া সরকারের বরাত দিয়ে এখনও এ সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/কালাম