একজন পারমাণবিক এবং রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ বিবিসিকে বলেছেন, সম্ভাব্য লক্ষ্য হিসেবে ইরানের দ্বিতীয় শহর, ইস্ফাহানকে বেছে নেওয়া ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’।
যুক্তরাজ্য এবং নেটোর পারমাণবিক বাহিনীর সাবেক কমান্ডার হামিশ ডি ব্রেটন গর্ডন উল্লেখ করেছেন, শহরটির আশেপাশে অনেকগুলো সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। সেগুলোরই একটি ছিল লক্ষ্যবস্তু।
বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘(আলোচিত আক্রমণ) যথেষ্ট নিকটে ছিল, যেখানে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে, বলে আমরা ধারণা করি সেই স্থানটির। সুতরাং এটা তাদের জন্য একটা ঝাঁকুনি।’
ডি ব্রেটন হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে বলেন, ‘মূলত সামর্থ্যের এবং সেইসাথে সম্ভবত লক্ষ্য সম্পর্কেও জানান দেওয়ার চেষ্টা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইরান ইসরায়েলের দিকে তিনশোর বেশি মিসাইল ছুঁড়েছে, প্রায় সবগুলোকেই ভূপাতিত করা হয়। ইসরায়েল ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে ছুঁড়েছে মাত্র একটি বা দু’টি-যা প্রতিরক্ষা ভেদ করে আঘাত হেনেছে এবং ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে।’
তিনি আরও দাবি করেন, প্রথাগত সামরিক সক্ষমতার বিচারে ইসরায়েল ইরানের চেয়ে এগিয়ে আছে। সেই জন্যই তেহরান প্রক্সি ওয়্যারে (ছায়াযুদ্ধ) বেশি আগ্রহী এবং ‘ইসরায়েলের সাথে সরাসরি যুদ্ধ এড়িয়ে চলে। কারণ, তারা জানে নিদারুণ পরাজয় হবে তাদের’।
ইরানিদের তরফে হামলার গুরুত্বকে খাটো করে দেখা প্রসঙ্গে ডি ব্রেটন গর্ডন বলেন, তারা স্বীকার করতে চাইবে না যে কোনো ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের ‘পুরনো’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করেছে এবং লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে।’
প্রসঙ্গত, সপ্তাহান্তে আক্রমণের প্রতিশোধ হিসেবে ইরানের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। শুক্রবার ভোরে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় ইস্ফাহান প্রদেশ একাধিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এবিসি, সিবিএস এবং সিএনএন, অন্যান্য মিডিয়া মধ্যপ্রাচ্যের সময় শুক্রবার ভোরে ইরানে ইসরায়েলের হামলার কথা জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোকে বলেছেন, ইসরায়েল ইরানে প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে। তবে বিদেশ থেকে ইরানে কোনো ‘হামলা’ হয়নি বলে খবর দিয়েছে ইরানি গণমাধ্যম।
এর আগে গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। এই হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে।
এ ঘটনার পর ইরান এক সপ্তাহের কম সময় শনিবার রাতে ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো সরাসরি হামলা চালায়। তারা ৩০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল।
সূত্র : বিবিসি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত