সুপার টাইফুন ‘ইয়াগি’ চীনের হাইনান প্রদেশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। দ্বিতীয় দিনের মতো ওই এলাকায় ট্রেন, নৌযান ও ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৪ লাখ মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে চীন।
শুক্রবার এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এই ঝড় দেশের দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হানতে পারে, এই আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়েছে।
কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ‘সিনহুয়া’ জানিয়েছে, টাইফুনটি শুক্রবার দিনের শেষ দিকে জনপ্রিয় অবকাশ কেন্দ্র হাইনানের উপকূলীয় এলাকার স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পর পার্শ্ববর্তী গুয়াংডং প্রদেশে আঘাত হানতে পারে।
বৃহস্পতিবার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় উভয় প্রদেশে বন্যার জন্য জরুরি ৩ নম্বর সতর্কতা জারি করেছে।
সিনহুয়া জানায়, কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে বলা হয়েছে-ইয়াগি ‘২০১৪ সালের পর থেকে চীনের দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন হতে পারে। যা বন্যা ও পরিস্থিতি মোকাবেলার কাজকে খুব চ্যালেঞ্জিং করে তুলবে।’
নাসার আর্থ ডাটা অনুসারে ইয়াগির বাতাসের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটারের (১৪৯ মাইল) বেশি এবং টাইফুনটি ‘একটি ৪ ক্যাটাগরি হারিকেনের সমতুল্য’।
ইয়াগির ৪০০ কিলোমিটারের বলয়ের মধ্যে অবস্থানের কারণে হংকংয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। নগরীতে স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত তৃতীয়-সর্বোচ্চ টাইফুন সতর্কতা কার্যকর থাকবে।
শুক্রবার হংকংয়ের স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে এবং অর্থনৈতিক হাব জুড়ে গণপরিবহন সীমিত করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত তিনজন আহত হয়েছে, তবে শুক্রবার নগরীতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলেও ক্ষয়ক্ষতি সীমিত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়কে আরও তীব্রতর করেছে। এতে প্রবল বৃষ্টিপাত ও তীব্র দমকা হাওয়া নিয়ে আসছে যা আকস্মিক বন্যা এবং উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
এই সপ্তাহের শুরুতে ইয়াগি ফিলিপাইনের লুজোন দ্বীপে বন্যা ও ভূমিধসের সূত্রপাত করেছিল এবং এতে কমপক্ষে ১৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
দক্ষিণ চীনের দিকে যাওয়ার পর এটি শনিবার বিখ্যাত ইউনেস্কো হেরিটেজ সাইট হ্যালং বে-এর আশপাশে উত্তর এবং উত্তর-মধ্য অঞ্চলে আঘাত হানতে ভিয়েতনামের দিকে যাবে।
ভিয়েতনামের কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই বৃহস্পতিবার উপকূলীয় দ্বীপের প্রায় ২২০০ পর্যটককে মূল ভূখণ্ডে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে এবং টাইফুনের মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য ২৭০০ জনেরও বেশি সেনা সদস্য মোতায়েন করেছে।
সূত্র : বিবিসি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত