ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা বহুদিনের। সম্প্রতি হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যার জন্য ইরান ইসরায়েলকে দায়ী করেছে এবং কঠিন শাস্তির হুমকি দিয়েছে। যদিও ইসরায়েল সরাসরি কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে তারা চূর্ণবিচূর্ণ আঘাত হেনেছে।
ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ গত কয়েক দশকে ইরানের অভ্যন্তরে একাধিক গুপ্তহত্যা, সাইবার আক্রমণ, এবং ড্রোন হামলার নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে বলে ধারণা করা হয়। মোসাদের গোপন অভিযানে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত শীর্ষ বিজ্ঞানীরা নিহত হয়েছেন। ইরানের অভিযোগ, মোসাদ ইরানের বিজ্ঞানী, সামরিক কর্মকর্তা, এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যা করেছে।
ইরানে গুপ্ত হত্যা ও সাইবার হামলা
২০১০ সালের জানুয়ারিতে তেহরানের বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক মাসুদ-আলি-মোহাম্মদী একটি মোটরসাইকেলে রাখা বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন। এ ঘটনার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে ইরান। একইভাবে ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে ইরানের শীর্ষ পারমাণবিক প্রকৌশলী মাজিদ শাহরিয়ারি একটি গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত হন। এর পেছনেও ইসরায়েলের হাত থাকার অভিযোগ করা হয়।
২০২০ সালের নভেম্বরে শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে হত্যা করা হয়, যাকে ইরানের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচির মূল পরিকল্পক হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
২০২২ সালে, ইরানের ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কর্নেল হাসান সায়াদ খোদাইকেও হত্যা করা হয়। প্রতিটি ঘটনার পেছনে ইসরায়েলের অংশগ্রহণের অভিযোগ করা হয়, যদিও সরাসরি কোনো প্রমাণ মেলে না।
সাইবার আক্রমণ ও ড্রোন হামলা
ইসরায়েল শুধু হত্যাকাণ্ডেই থেমে থাকেনি, ইরানে একাধিক সাইবার আক্রমণের পেছনেও তাদের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ২০১০ সালে ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পে স্টাক্সনেট ভাইরাস আক্রমণ করে বিশাল ক্ষতি সাধন করে। ২০২১ সালে ইরানের জ্বালানি ব্যবস্থা এবং ২০২২ সালে সামুদ্রিক জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায়ও সাইবার হামলা চালানো হয়।
২০২৪ সালে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় সাতজন নিহত হন। এর প্রতিশোধে ইরান ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
এই সব ঘটনার পেছনে ইসরায়েলে উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করা এবং তাদের সামরিক শক্তি কমিয়ে আনা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল