গত পাঁচ বছরে যুক্তরাজ্যের লেস্টারে এক হাজার দুইশোরও বেশি পোশাক শ্রমিককে অবৈধভাবে কম বেতন দেওয়া হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, ২০১৯-২০ সাল থেকে ২০২৩-২৪ সাল পর্যন্ত পাঁচটি ফিসক্যাল ইয়ারে এইচএম রেভিনিউ অ্যান্ড কাস্টমস কর্তৃক প্রকাশিত পরিসংখ্যানে শ্রমিকদের উল্লেখযোগ্য মজুরি শোষণের ঘটনা পাওয়া গেছে। এই সময়ে টেক্সটাইল কর্মীদের এক লাখ ৭৭ হাজার ৬৭৮ পাউন্ড মজুরি বকেয়া রাখা হয়েছে। একই সময়ে টেক্সটাইল কোম্পানিগুলোকে মোট তিন লাখ ৩৮ হাজার ৫০৪ পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে।
ফ্রিডম অফ ইনফরমেশনের ভিত্তিতে প্রাপ্ত তথ্যে আরও জানা গেছে, শ্রমিকদের কম অর্থ প্রদানের জন্য দায়ী নিয়োগকর্তাদের কেউই ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হননি। মহামারী চলাকালীন সময়ে লিসেস্টারের গার্মেন্টস সাপ্লাই চেইন সম্পর্কে জঘন্য প্রতিবেদনে প্রকাশের পরে এই পরিসংখ্যান সামনে এসেছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ইন্ডিয়ার বেশ কয়েকজন শ্রমিক বিবিসিকে বলেন যে, তারা প্রতি ঘন্টায় ৩ থেকে ৫ পাউন্ড মজুরি পেয়েছেন। এসব শ্রমিক কাজ পাচ্ছিলো না এবং ইংরেজি জানতো না৷ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের অনেক কম মজুরি দেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিয়ান বংশদ্ভূত সেলাই মেশিন অপারেটর পরমজিৎ কৌর বলেন, কিছু নিয়োগকর্তা একটি কাগজের ট্রেইল তৈরি করে তাদের ট্র্যাকগুলো ঢেকে দেন। এতে দেখায় যে তিনি ন্যাশনাল লিভিং ওয়েজ অনুযায়ী স্যালারি পাচ্ছেন। তারা পে-স্লিপে পুরো স্যালারি দেখায়। কিন্তু একবার আমার ব্যাংক একাউন্টে টাকা গেলে সেই টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, এই টাকা ফেরত দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। কারণ আমার হাতে কোনো কাজ নেই। এদিকে ভুক্তভোগী মিসেস কৌরকে ফ্যাশন-ওয়ার্কার্স অ্যাডভাইস ব্যুরো লিসেস্টার (এফএবি-এল) সাপোর্ট দিচ্ছে। এফএবি-এল জানিয়েছে তারা প্রায় ৯০ জন কর্মীকে সাপোর্ট দিয়েছে এবং তাদের প্রাপ্য অর্থ ফেরত পেতে সহায়তা করেছে। এইচ এম রেভিনিউ অ্যান্ড কাস্টমস জানিয়েছে, তারা ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিলের মধ্যে ২৫৫টি কেস এসেসমেন্ট করছে। এতে দুই হাজারেরও বেশি শ্রমিকের তিন লাখ ৯০ হাজারেরও বেশি বকেয়া মজুরি চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ মজুরি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ