দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রবিবারের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দুর্ঘটনায় ১৭৯ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় মঙ্গল ও বুধবার পুলিশ মুয়ান বিমানবন্দর, জেজু এয়ারের সিউল কার্যালয় এবং একটি আঞ্চলিক বিমান অফিসে অভিযান চালিয়েছে।
জেজু এয়ার ফ্লাইট ২২১৬ থাইল্যান্ড থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার পথে রানওয়েতে জরুরি অবতরণ করে। কিন্তু ল্যান্ডিং গিয়ারের ত্রুটির কারণে বিমানটি রানওয়ে পার হয়ে একটি কংক্রিটের বাঁধে বিমানটি আঘাত করে এবং মুহূর্তেই আগুন ধরে যায়। বিমানে ১৮১ জন আরোহী ছিলেন, যার মধ্যে দুইজন ক্রু জীবিত রয়েছেন। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে হওয়া সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ২৯ ডিসেম্বরের এ দুর্ঘটনা সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র ও উপকরণ জব্দ করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ঘটনায় জেজু এয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কিম ই-বেই এবং আরও এক কর্মকর্তাকে দেশ ছাড়তে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পেশাগত অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগ আনা হতে পারে।
বিমান দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্তকারীরা ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করেছেন। ককপিট ভয়েস রেকর্ডার থেকে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হলেও ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডারটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এটি যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া সরকার দেশের সব বিমান পরিচালনায় জরুরি নিরাপত্তা পরিদর্শন ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি, ছয়টি এয়ারলাইনের ব্যবহৃত ১০১টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারের উপর বিশেষ পরীক্ষা চালানো হচ্ছে।
অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মোক বলেছেন, পরিদর্শনে কোনো ত্রুটি ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। জনগণের মধ্যে একই মডেলের বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, যা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।
অভিযোগ উঠেছে, রানওয়ের শেষ প্রান্তে থাকা কংক্রিটের বাঁধ নিয়ে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাঁধটির অবস্থান আরও নিরাপদ স্থানে না থাকার কারণেই যাত্রীদের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় পাঁচটি শিশু এবং একই পরিবারের নয়জন নিহত হয়েছেন।
বুধবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের অনুমতি পেয়ে স্বজনরা তাদের প্রিয়জনদের বিদায় জানান। তারা ঐতিহ্যবাহী নতুন বছরের খাবার ত্তেকগুক (চালের কেকের স্যুপ) সেখানে রেখে প্রার্থনা করেন। এদিকে, দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহতদের স্মরণে অস্থায়ী বেদি স্থাপন করা হয়েছে, সেখানে শত শত মানুষ এসে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। সূত্র : গার্ডিয়ান
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল