দীর্ঘ জল্পনার শেষে মুক্তি পেয়েছে রণবীর সিং অভিনীত বহু প্রতীক্ষিত ছবি ধুরন্ধরের ট্রেলার। আদিত্য ধর পরিচালিত এই ছবিটি ‘অবিশ্বাস্য সত্য ঘটনা’র ওপর ভিত্তি করে নির্মিত বলে দাবি করা হচ্ছে। ট্রেলার প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে চর্চা। রিল লাইফের এই চরিত্রগুলোর পেছনে লুকিয়ে আছে কোন বাস্তব ব্যক্তিত্বের গল্প, সে নিয়ে চলছে আলাপ। আর অনেক নেটিজেন দাবি করেছে তারা সেই রহস্যের জট প্রায় খুলেই ফেলেছেন।
ছবির মূল চরিত্র ‘র্যাথ অফ গড’ রূপে রণবীর সিংকে একজন ভারতীয় সেনা বা আন্ডারকভার এজেন্ট হিসেবে দেখা গেলেও তার চরিত্রের নাম ট্রেলারে প্রকাশ করা হয়নি। তবে তার লুক ও কাজের ধরন দেখে অনেকেই ধারণা করছেন, তিনি হয়তো অশোক চক্র সম্মানপ্রাপ্ত মেজর মোহিত শর্মার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এই মেজরই ‘ইফতিকার ভাট’ ছদ্মনামে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি দলে অনুপ্রবেশ করে বেশ কয়েকটি সফল অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, ছবির প্রধান খলনায়ক ‘অ্যাঞ্জেল অফ ডেথ’ মেজর ইকবালের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্জুন রামপাল। ট্রেলারে তার নৃশংসতা স্মরণ করিয়ে দেয় ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধে বন্দি মেজর সৌরভ কালিয়াসহ অন্যান্য ভারতীয় সৈন্যদের ওপর হওয়া অত্যাচারের ঘটনা। ধারণা করা হচ্ছে, তার চরিত্রটি এক সময়ের মোস্ট ওয়ান্টেড ইলিয়াস কাশ্মীরির অনুপ্রেরণায় তৈরি, যিনি ভারত সরকারের কাছে নয়া ওসামা বিন লাদেন নামেও পরিচিত ছিলেন এবং ২৬/১১ মুম্বাই হামলাসহ একাধিক সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ইন্ডিয়ান ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (র)-এর শীর্ষ কর্মকর্তা অজয় সান্যালের চরিত্রে দেখা যাবে আর মাধবনকে, যার কোডনেম ‘চ্যারিওটিয়ার অফ কর্মা’। ধূমপানরত, গোঁফ ও চশমা পরা এই চরিত্রটি দেখে নেটিজেনরা প্রায় নিশ্চিত যে তিনি আসলে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও সাবেক ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ডিরেক্টর অজিত ডোভাল। ডোভাল পাঞ্জাব ও মিজোরামে কাউন্টার-ইনসার্জেন্সি অপারেশন, ১৯৯৯-এর আইসি-৮১৪ বিমান হাইজ্যাকের সময় পণবন্দি মুক্তি এবং সাম্প্রতিক সার্জিক্যাল স্ট্রাইকসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মিশনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন।
খলচরিত্রের তালিকায় আরও আছেন অক্ষয় খান্না অভিনীত অ্যাপেক্স প্রিডেটর রেহমান ডাকাইত, যিনি পাকিস্তানি রাজনীতিতে এক বিশাল শক্তি হিসেবে পরিচিত। রেহমান ডাকাইত চরিত্রটি আসলে কুখ্যাত করাচি গ্যাংস্টার সর্দার আব্দুল রেহমান বালোচ-এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যিনি এক সময় নিজের মাকেও হত্যা করার অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন এবং পিপল’স আমান কমিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ২০০৯ সালে পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যু হয়।
এই কুখ্যাত গ্যাংস্টারকে দমনকারী এসপি চৌধুরী আসলামের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয় দত্ত, যার কোডনেম ‘দ্য জিন’। চরিত্রটি তৈরি হয়েছে পাকিস্তানের শীর্ষ এনকাউন্টার স্পেশালিস্টদের চৌদহরি আসলামের জীবন থেকে। এই পুলিশ অফিসার রেহমান ডাকাইতকে গ্রেপ্তার ও হত্যার অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জঙ্গি দমনে কঠোর ভূমিকা নেওয়ায় ২০১৪ সালে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের বোমা হামলায় তিনি নিহত হন।
ছবিটির কাস্টিং ডিরেক্টর মুকেশ ছাবড়া জানিয়েছেন, সঞ্জয় দত্ত, অক্ষয় খান্না ও আর মাধবনের কথা তাদের মাথায় প্রথম থেকেই ছিল। আর মাধবন চরিত্রটি শুনে প্রথম দিকে হাসলেও পরে তা করতে রাজি হন।
সারাহ অর্জুন অভিনীত এই বহুল প্রতীক্ষিত ছবিটি মুক্তি পেতে চলেছে আগামী ৫ ডিসেম্বর।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল