ফিলিপাইনে পদত্যাগ করেছেন দুই মন্ত্রী। তারা হলেন- নির্বাহী সচিব লুকাস বারসামিন এবং বাজেট ও প্রশাসন সচিব অ্যামেনাহ পাঙ্গানডামান। অবৈধ অবকাঠামো ও বিলিয়ন ডলারের বাজেট ঘাটতির মামলায় প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র সরকারের এই দুই মন্ত্রী পদত্যাগ করেন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের প্রেস অফিসার ক্লেয়ার কাস্ত্রো স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
কাস্ত্রো বলেন, “বন্যা প্রতিরোধমূলক প্রকল্পে তাদের দপ্তরগুলোর অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার পর, প্রশাসনকে বিষয়টি যথাযথভাবে সমাধান করার সুযোগ দেওয়ার দায়িত্বস্বরূপ তারা পদত্যাগ করেছেন।”
ফিলিপাইনের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও সিঙ্গাপুরের আইএসইএএস-ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউটের ভিজিটিং সিনিয়র ফেলো আরিস আরুগে-এর মতে, জুলাই মাসে দুর্নীতির কেলেঙ্কারি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বারসামিন এবং পাঙ্গানডামান হলেন মার্কোস সরকারের সর্বোচ্চ পদস্থ সদস্য- যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছে।
তার মতে, প্রেসিডেন্ট নিজে আপাতত বিতর্কের বাইরে থাকলেও পরিস্থিতি যেকোনও সময় বদলাতে পারে।
তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এই মুহূর্তে প্রাসাদ প্রেসিডেন্টকে এই পরিস্থিতি থেকে বের করে আনার চেষ্টা করছে এবং এই কারণেই নির্বাহী সচিব, বাজেট সচিবের ‘পদত্যাগ’ করানো হয়।”
আরুগে বলেন, “মার্কোস জুনিয়রের এখনও সংসদে ‘আরামদায়ক’ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে কারণ অনেক এমপি এখনও তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতার্তের নেতৃত্বের তুলনায় পছন্দ করেন, তবে আরও প্রমাণ সামনে এলে ‘সব বাজি শেষ’ হতে পারে।”
চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে পলাতক রাজনীতিবিদ জালডি কো বলেন, তিনি একটি বরাদ্দের কমিটির প্রধান থাকাকালে মার্কোস তাকে ‘সন্দেহজনক জনকল্যাণের’ জন্য বাজেটে ১.৭ বিলিয়ন ডলার যোগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এক মাস ধরে তদন্তের পর দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে জড়িত অভিযুক্ত প্রথম কর্মকর্তাদের মধ্যে জালডি কো ছিলেন।
মার্কোস জুনিয়র কংগ্রেসে এক বক্তব্যে বন্যা-নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে ঠিকাদারদের নিম্নমানের উপাদান ব্যবহারের তথ্য প্রকাশের পর, দুনীর্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে দেশটির জনগণ রাস্তায় নেমে আসে।
ফিলিপাইন প্রতিবছরই টাইফুন ও অন্যান্য গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের কবলে পড়ে এবং বন্যা সেখানে নিয়মিতভাবে ভয়াবহ একটি সমস্যা।
এই কেলেঙ্কারিতে অভিযোগ উঠেছে যে, সরকারি বাজেট থেকে প্রাপ্ত অর্থে দুর্নীতিপূর্ণ বা নিম্নমানের বন্যা প্রতিরোধমূলক অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে এবং ম্যানিলার বিক্ষোভে সম্প্রতি পাঁচ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছে। সূত্র: আল-জাজিরা, স্ট্রেইটস টাইমস
বিডি প্রতিদিন/একেএ