রাশিয়া ও ইউক্রেন একসঙ্গে মোট ৩৯০ জন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। এই ঘটনা চলমান যুদ্ধের সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময় বলে বিবেচিত হচ্ছে। শুক্রবার এই বিনিময়ের সূচনা হয় এবং দুই পক্ষই জানিয়েছে, শনিবার ও রবিবার আরও বন্দি মুক্তি দেওয়া হবে।
উভয় পক্ষ জানিয়েছে, প্রথম দফায় তারা বিপরীত পক্ষের ২৭০ জন সেনা ও ১২০ জন সাধারণ নাগরিক মুক্তি দিয়েছে। এই বন্দি বিনিময়ের উদ্যোগ এসেছে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সরাসরি বৈঠকের মাধ্যমে। ওই বৈঠকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও, একে শান্তির পথে একটি বাস্তব অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্ত রুশ নাগরিকদের বর্তমানে বেলারুশে রাখা হয়েছে। সেখানে তারা মানসিক ও চিকিৎসা সহায়তা পাচ্ছেন। এরপর তাদের রাশিয়ায় ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তাদের মধ্যে কিছু মানুষ রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল থেকে ইউক্রেনের হামলার সময় আটক হয়েছিল।
অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সামাজিক মাধ্যমে মুক্তিপ্রাপ্ত ইউক্রেনীয়দের ছবি পোস্ট করেন। তারা সবাই মাথা ন্যাড়া অবস্থায় ইউক্রেনের জাতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করছিলেন।
কিয়েভের স্বাধীনতা স্কয়ারে মুক্তিপ্রাপ্ত এক বন্দির স্ত্রী ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, তিনি ২০২২ সাল থেকে স্বামীর মুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন। অবশেষে সরকারি ফোন পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন। ‘আমরা অপেক্ষা করেছি, আশায় ছিলাম আর লড়াই চালিয়ে গেছি,’ বলেন ভিক্টোরিয়া নামে ওই নারী।
এই বন্দি বিনিময় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে দুই পক্ষকে অভিনন্দন জানিয়ে লেখেন, ‘এই আলোচনার ফলাফল ভবিষ্যতে বড় কিছুতে পরিণত হতে পারে।’
এদিকে যুদ্ধ বন্ধে কিছু উদ্যোগ দেখা গেলেও সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির বিষয়ে দ্বন্দ্ব রয়ে গেছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত। তবে রাশিয়া বলছে, তারা আগে কিছু শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত হামলা বন্ধ করবে না। ইউক্রেনীয় পক্ষ সেই শর্তগুলোকে ‘অসম্ভব ও অগ্রহণযোগ্য’ বলেছে।
রাশিয়া বলেছে, তারা আলোচনায় প্রস্তুত, তবে ইউক্রেনকে অস্ত্রহীন করা, আরও ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া, এবং পশ্চিমা সামরিক জোটে যোগ না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। কিন্তু ইউক্রেন একে আত্মসমর্পণ বলে মনে করছে এবং ভবিষ্যতে রুশ আগ্রাসনের মুখে নিজেকে বিপর্যস্ত মনে করছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল