লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ যদি আগামী নভেম্বরের মধ্যে অস্ত্র সমর্পণ না করে, তাহলে ডিসেম্বর থেকে ফের দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরু করবে ইসরায়েল। বৈরুতকে সম্প্রতি এই শর্ত দিয়েছে ওয়াশিংটন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত এবং তুরস্কের রাষ্ট্রদূত থমাস বারাক গত ১৯ জুন বৈরুত সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে লেবাননের সরকারি কর্মকর্তাদের ওয়াশিংটনের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈরুত সফরে ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে স্থায়ীভাবে সংঘাতের অবসান বিষয়ক একটি লিখিত রোডম্যাপ দিয়েছেন বারাক। ৬ পৃষ্ঠার সেই লিখিত নথিতে সবার ওপরে রয়েছে হিজবুল্লাহর অস্ত্র সমর্পণের বিষয়টি।
সেখানে বলা আছে, হিজবুল্লাহ এবং লেবানেন সক্রিয় তাদের মিত্র গোষ্ঠীগুলো যদি অস্ত্র সমর্পণে রাজি হয়, কেবল তাহলেই দক্ষিণ লেবাননে যেসব ইসরায়েলে সেনা ঘাঁটি গেড়েছে— তারা ইসরায়েলে যাবে এবং লেবাননে আর কখনও ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কা থাকবে না।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শর্তটি হলো- প্রতিবেশী সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা এবং দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তের অপর পাশে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল। এই অঞ্চলেই বিশ্বের বৃহত্তম সশস্ত্র ইসলামি রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান ঘাঁটি। গোষ্ঠীটির অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনার অবস্থান এখানে। ইরানের প্রত্যক্ষ সমর্থন ও মদতে ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হিজবুল্লাহ জন্মলগ্ন থেকেই ইসরায়েল রাষ্ট্রকে ধ্বংসের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে বিমান অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। টানা প্রায় দুই মাসের অভিযানে হিজবুল্লাহর বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনা, অস্ত্রাগার ধ্বংস হয় এবং গোষ্ঠীটির প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহসহ শীর্ষ প্রায় সব কমান্ডার নিহত হন।
ওই অভিযানের সময়েই দক্ষিণ লেবাননে ঘাঁটি গাড়ে ইসরায়েলি সেনারা। গত বছর যুদ্ধবিরতি হওয়া সত্ত্বেও এখনও তারা লেবানন ত্যাগ করেনি।
গত ১৯ জুন বৈরুত সফরে গিয়ে থমাস বেকার বলেছিলেন— লেবাননের সরকার এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ১ জুলাইয়ের মধ্যে জানাতে হবে ওয়াশিংটনকে।
এদিকে লেবাননের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনও তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, তবে এ ইস্যুতে ইতোমধ্যে সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে বৈরুত। সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/একেএ