২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলার মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক ষড়যন্ত্রের আয়োজন করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কংগ্রেস সদস্য ও জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ তৎকালীন প্রশাসনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গ্যাবার্ড অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে ভুয়া গোয়েন্দা তথ্য তৈরি করা হয়। তার ভাষায়, ২০১৬ সালে আমাদের দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা একটি রাষ্ট্রদ্রোহমূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। তারা আমেরিকান জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা পালনে বাধা দিতে চেয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ওবামা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা একটি দীর্ঘমেয়াদি অভ্যুত্থানের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন এবং রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে যে গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করা হয়েছিল, তা ছিল ভুয়া এবং অবিশ্বস্ত। গ্যাবার্ডের দাবি, ওই তথ্যে ব্যবহৃত হয়েছিল বিতর্কিত ‘স্টিল ডজিয়ার’, যা তৈরি করেছিলেন ব্রিটিশ গোয়েন্দা বিশ্লেষক ক্রিস্টোফার স্টিল।
তুলসি গ্যাবার্ড বলেন, এই ষড়যন্ত্রে জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা জরুরি। দেশের গণতন্ত্র, জনগণের আস্থা ও আমাদের ভবিষ্যৎ এর উপর নির্ভর করছে।
তিনি জানান, তার দাবির পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগে বেশ কিছু নথি জমা দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে ওবামা প্রশাসনের সময়কার সাইবার হুমকি সংক্রান্ত একটি আংশিকভাবে গোপন গোয়েন্দা মূল্যায়ন এবং তৎকালীন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক জেমস ক্ল্যাপারের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত কিছু গোপন মেমো।
গ্যাবার্ডের অভিযোগে যাদের নাম এসেছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, তৎকালীন সিআইএ পরিচালক জন ব্রেনান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইস ও এফবিআই উপপরিচালক অ্যান্ড্রু ম্যাকাব।
উল্লেখ্য, তুলসি গ্যাবার্ডের গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় সবচেয়ে বিতর্কিত নিয়োগগুলোর একটি ছিল। গোয়েন্দা সংক্রান্ত পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্যের জন্য তিনি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।
বিডি-প্রতিদিন/শআ