ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তিন মন্ত্রিসভার সদস্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ বাদ দিয়ে দেশীয় বিকল্প ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক বাণিজ্যিক টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে এটি ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের অন্যতম সবচেয়ে জোরালো প্রচারণা বলে মনে করা হচ্ছে।
গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় আমদানির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর মোদি দেশীয় পণ্য ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এরপর থেকেই শিল্পোদ্যোক্তা থেকে শুরু করে মন্ত্রিসভার সদস্যরাও দেশীয় পণ্যের পক্ষে সরব হচ্ছেন।
তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, তিনি মহাসড়ক প্রকল্পের উপস্থাপনাটি করেছেন দেশীয় সফটওয়্যার জোহো ব্যবহার করে, মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট নয়। একইভাবে, প্রকল্পের মানচিত্র তৈরি হয়েছে ম্যাপমাইইন্ডিয়া দিয়ে, গুগল ম্যাপস নয়। তিনি বলেন, ‘সুন্দর দেখাচ্ছে, তাই না? স্বদেশি।’
সম্প্রতি বৈষ্ণব একটি ভিডিওবার্তায় জোহো সফটওয়্যার ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভারতীয় পণ্য ব্যবহারই দেশের প্রযুক্তি বিকাশের পথ প্রশস্ত করবে। তাঁর পোস্টটি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ ৬২ লাখবার দেখা হয়েছে।
এদিকে, বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ও শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান দেশীয় মেসেজিং অ্যাপ আরাট্টাই (তামিল ভাষায় ‘চ্যাট’) ব্যবহারের প্রচারণা চালাচ্ছেন। গোয়েল এক্সে লিখেছেন, ‘মেড ইন ইন্ডিয়া প্ল্যাটফর্ম আরাট্টাইয়ে থাকতে পেরে গর্বিত, এটি ভারতীয়দের আরও ঐক্যবদ্ধ করছে।’
বাজার বিশ্লেষক সংস্থা সেন্সর টাওয়ার জানিয়েছে, গত মাসে আরাট্টাই অ্যাপটি ৪ লাখেরও বেশি বার ডাউনলোড হয়েছে—আগস্টে যার সংখ্যা ছিল ১০ হাজারেরও কম। সেপ্টেম্বরের ২৬ তারিখে দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারী এক লাফে ১ লাখে পৌঁছায়, যা আগের দিনের তুলনায় ১০০ শতাংশ বেশি।
তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশীয় কোম্পানিগুলোর জন্য বৈশ্বিক প্রযুক্তি ব্র্যান্ডের বিকল্প হয়ে ওঠা কঠিন। ২০২১ সালে টুইটারের বিকল্প হিসেবে প্রচার পাওয়া কু অ্যাপ তহবিল সংকটে বন্ধ হয়ে যায়।
ভারতীয় জনসংযোগ সংস্থা পারফেক্ট রিলেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা দিলীপ চেরিয়ান বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা যথেষ্ট নয়, সফল হতে হলে জোহোর মতো ব্র্যান্ডের প্রয়োজন উদ্ভাবনী বৈশিষ্ট্য, বিনিয়োগ ও তথ্য নিরাপত্তা।’
সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/আশিক