নাগরিকদেরকে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে জার্মানিজুড়ে ১৬ রাজ্যেই গণপরিবহনে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হচ্ছে। আর বার্লিন বাদে প্রায় সব রাজ্যেই শপিংমলেও বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে। খবর বিবিসির।
জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় স্যাক্সনি রাজ্য প্রথম মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ তালিকায় সবশেষে যোগ দিয়েছে ব্রেমেন। আজ শুক্রবারই রাজ্যের সিনেট মাস্ক পরার নিয়ম পাস করার কথা রয়েছে। দেশটির বেশির ভাগ রাজ্যই এভাবে নিয়ম পাসের পর তা চালু করবে সোমবার থেকে। তবে কী ধরনের মাস্ক পরতে হবে সে ব্যাপারে রাজ্য ভেদে ভিন্নতা আছে। কিছু রাজ্যে গণপরিবহন এবং শপিংমলগুলোতে কাপড়ের মাস্ক পরা, আবার কিছু রাজ্যে অন্য কোনো বিকল্প না থাকলে স্কার্ফ, ব্যান্ডানা বা অন্য যে কোনো কাপড় দিয়েও নাক মুখ ঢেকে রাখতে বলা হচ্ছে। জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল গত সপ্তাহে দেশজুড়ে লকডাউন কিছুটা শিথিল করার পদক্ষেপ নেওয়ায় মাস্ক পরার ওপর জোর দিয়েছেন। উত্তরাঞ্চলীয় মেকলেনবার্গ-ওয়েস্টার্ন পমরেনিয়া রাজ্য এরই মধ্যে মাস্ক ছাড়া কেউ গণপরিবহনে উঠলে ২৫ ইউরো জরিমানা দিতে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। বাকি রাজ্যগুলো এখনো এমন কোনো শাস্তির কথা ঘোষণা করেনি।
এদিকে, বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাস গণতন্ত্রের জন্য এক ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। আর এই চ্যালেঞ্জ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করছে। গতকাল জার্মানির পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেছেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল।
জার্মানিতে করোনার পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও এই মহামারীর পরবর্তী ধাপের বিপদ অত্যন্ত সতর্কতা এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে মোকাবিলা করতে দেশটির নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সংসদে দেওয়া ভাষণে মেরকেল বলেন, ‘এটি ভাইরাসের শেষ পর্ব নয়, এখন শুরু মাত্র। আরও দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের এটির সঙ্গে চলতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি জানি, বিধি-নিষেধগুলো কতটা কঠিন; এটা গণতন্ত্রের জন্যও চ্যালেঞ্জ। এটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার সীমিত করে ফেলেছে। গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা; যা পরিস্থিতিকে সহনীয় করতে এবং গণতান্ত্রিক স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সহায়তা করে; সে সবও খর্ব হচ্ছে।’
জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, এটা অত্যন্ত চমৎকার যে, মানুষ পরস্পরের প্রতি বেশ সহমর্মিতা দেখাচ্ছে। এমন ভাষণের জন্য পার্লামেন্টে মেরকেলের বেশ প্রশংসা করেন এমপিরা। এই ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণ করা ইউরোপের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বুন্দেসতাগে দেওয়া এই ভাষণে মেরকেল বলেন, আমাদের জনগণ এবং তাদের জীবনের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
অপরদিকে ইউরোপে চলমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গতকালই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে এক ভিডিও সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার।
উল্লেখ্য, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খেলেও জার্মানিতে সেই চিত্র কিছুটা ভিন্ন। জার্মানিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫০ হাজার ৬৬৬ জন। তবে সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৩০০ জন। এছাড়া মারা গেছেন ৫ হাজার ৩১৫ জন। বিবিসি, রয়টার্স।
