রেকর্ড গতিতে গবেষণা, বিজ্ঞানীদের সৌজন্যে একাধিক কভিড-প্রতিষেধক চলে এসেছে বাজারে। কিন্তু এসব টিকা মানুষকে সুরক্ষা দেবে এক বছর। একটি সমীক্ষায় এমনটাই দাবি করেছেন এপিডিমিয়োলজিস্ট ও ভাইরোলজিস্টরা। তাদের আশঙ্কা, এক বছরেরও আগে অকেজো হয়ে পড়তে পারে কভিড টিকার ‘ফার্স্ট জেনারেশন’। কারণ ভাইরাসের মিউটেশন। তিনটি স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে সমীক্ষাটি হয়েছিল। তাতে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, দ্রুতগতিতে নিজেদের বদলে ফেলছে ভাইরাস। নতুন স্ট্রেইনগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চীনের উহানের প্রথম ভাইরাসের থেকে অনেক বেশি সংক্রামক।
ভাইরাসটি এতই বদলে যাচ্ছে যে, বর্তমানে বাজারে থাকা ভ্যাকসিনগুলো আদৌ কতটা কার্যকরী থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ২৮টি দেশের ৭৭ জন বিজ্ঞানী। দুই-তৃতীয়াংশ বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, তাদের সন্দেহ, বর্তমান প্রতিষেধকগুলো আর এক বছর কাজ করবে। এক-তৃতীয়াংশের মতে, আয়ু বড়জোর ৯ মাস। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশ যুক্ত রয়েছে ইয়েল, জন্স হপকিন্স, লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। অংশগ্রহণকারীদের ৮৮ শতাংশের অনুমান, বর্তমান প্রতিষেধকগুলোকে অকার্যকর করবে ভাইরাসের নতুন মিউটেশনের কারণে। এমন যদি হয়, গণটিকাকরণে বর্তমান স্ট্রেইনগুলোকে একসঙ্গে শেষ করে দেওয়া হলো, তা হলেই মুক্তি। নয়তো নতুন স্ট্রেইন তৈরি হতেই থাকবে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে একসঙ্গে গণটিকাকরণের কোনো সম্ভাবনা নেই। একদিকে ব্রিটেন, আমেরিকায় যখন দেশবাসীর চার ভাগের এক ভাগকে টিকা দেওয়া হয়ে গেছে, তখন দক্ষিণ আফ্রিকা, থাইল্যান্ডে মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশকেও টিকা দেওয়া হয়নি।এদিকে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় ৫৫ বছরের কম বয়সীদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগ বন্ধ করে দিল কানাডার বেশ কিছু প্রদেশ যেমন, অন্টারিও, কেবেক, ব্রিটিশ কলম্বিয়া, আলবার্টা। কানাডায় এমনিতেই টিকাকরণের গতি বেশ শ্লথ। তার মধ্যে এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে আরও বেশ কিছুটা ধাক্কা খেল প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উদ্যোগ।
টিকাকরণে পিছিয়ে রয়েছে এশিয়ার দেশগুলোও। দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্সের মতো দেশে কভিড টিকা কোভিশিল্ড পাঠাচ্ছে ভারত। কিন্তু ভারত সরকারের পক্ষ থেকে টিকা রপ্তানিতে কড়াকড়ি শুরু হতেই এ দেশগুলো বিপাকে পড়েছে।