বুধবার, ২৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ইরাক যুদ্ধের সমাপ্তি এ বছরই

বাইডেন-কাদিমি বৈঠক

ইরাক যুদ্ধের সমাপ্তি এ বছরই

ইরাকে দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের সমাপ্তি টানতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সেনারা দেশটিতে পা রাখার দেড় যুগ পর এ বছরের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযান গুটিয়ে নেবে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাদিমির মধ্যে এ বিষয়ে চুক্তিও হয়ে গেছে। পূর্বসূরি জর্জ ডব্লিউ বুশের সময় ইরাক ও আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান শুরু হয়েছিল। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পরই বাইডেন এই দুই বড় রণাঙ্গনের একটি আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে উদ্যোগী হন। এ বছরের আগস্টের শেষ দিকে আফগান ভূখন্ড ত্যাগ করার কথা মার্কিন সেনাদের। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাকের মধ্যে কৌশলগত আলোচনার অংশ হিসেবে সোমবার ওভাল অফিসে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসেন বাইডেন ও কাদিমি। বৈঠকের পর বাইডেন বলেন, ‘ইরাকে আমাদের সহায়তা, প্রশিক্ষণ, আইএসকে প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে, তবে এ বছরের শেষ নাগাদ সেখানকার যুদ্ধে আমরা আর থাকছি না।’ বর্তমানে ইরাকে আড়াই হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে, যারা মূলত আইএস’র বিরুদ্ধে অভিযানে কাজ করছে। সেই ভূমিকা থেকে সরে এসে শুধু ইরাকি বাহিনীর প্রশিক্ষণ এবং তাদের সুরক্ষা বিষয়ক পরামর্শ দেওয়ায় মনোযোগী হবে যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য ইরাকি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজটি যুক্তরাষ্ট্র শুরু করেছে অনেক আগে থেকেই।

এ বছরের শেষে ইরাকে মার্কিন বাহিনী তাদের লড়াই এর মিশন শেষ করলেও সেখানে সৈন্য সংখ্যা একই থাকবে। মূলত ইরাকি প্রধানমন্ত্রীকে সাহায্য করতেই যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত বছর বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের একজন শীর্ষ সামরিক অধিনায়ক কাসেম সোলাইমানি এবং ইরানের সমর্থনপুষ্ট এক শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীর নেতা নিহত হওয়ার পর থেকে ইরাকে মার্কিন সেনা উপস্থিতি এক বড় ইস্যুতে পরিণত হয়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ যেসব যুদ্ধ শুরু করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এই ঘোষণার মাধ্যমে তার আরও একটির সমাপ্তি টানলেন।

ইরাকের তৎকালীন নেতা সাদ্দাম হোসেনের সরকার ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের মজুদ গড়ে তুলেছে, এমন অভিযোগ তুলে ২০০৩ সালে দেশটিতে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী। এরপর সাদ্দামকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হলেও সেসব অস্ত্রের হদিস আজ পর্যন্ত মেলেনি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই অঞ্চলে মার্কিন সেনাদের ভূমিকাও বদলে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়েছে। কাদিমির সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা বলেছিলেন, অভিযান সফল হয়েছে এমন ঘোষণা কেউই দিতে যাচ্ছেন না, কারণ লক্ষ্য হচ্ছে আইএসকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা। বৈঠক শেষে হোয়াইট হাউসে  বাইডেন বলেন, ‘ইরাকে এখন আমাদের ভূমিকা হবে সেখানে আইএসকে মোকাবিলার জন্য ইরাকি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ এবং সহযোগিতা দিয়ে যাওয়া।

কিন্তু এ বছর শেষ হওয়ার পর সেখানে আমাদের আর কোনো লড়াইয়ের মিশন থাকবে না।’

সর্বশেষ খবর