চীনকে ঠেকাতে মরিয়া শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংগঠন জি৭। এর অংশ হিসেবেই ৬০ হাজার কোটি ডলারের তহবিল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে সংগঠনের নেতারা। মূলত উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোর জন্য এই তহবিল। দৃশ্যত চীনের আঞ্চলিক ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ (বিআরআই) প্রকল্পের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে উন্নত দেশগুলোর জোট এই পরিকল্পনা নিয়েছে।
বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা বিআরআই চাপিয়ে দিয়ে কম আয়ের দেশগুলোকে ঋণের জালে আবদ্ধ করছে। এর ফলে চীনের লাভ হচ্ছে। কারণ, তারা এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে বাণিজ্য বিস্তার করতে পারছে। এই উদ্যোগ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মান বাড়ানো, লিঙ্গ সমতা অর্জন এবং ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরি ত্বরান্বিত করবে। উল্লেখযোগ্য কিছু উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে অ্যাঙ্গোলায় সৌরবিদ্যুৎ চালিত প্রকল্প গ্রহণ, সেনেগালে টিকা উৎপাদন কারখানা নির্মাণ, সিঙ্গাপুর থেকে মিসর ও হর্ন অব আফ্রিকা হয়ে ফ্রান্স পর্যন্ত ১ হাজার ৬০৯ কিলোমিটার সাবমেরিন টেলিযোগাযোগ কেবল স্থাপন। চীনের উচ্চাভিলাষী বিআরআইয়ের পাল্টা উদ্যোগ হিসেবে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ২০১৩ সালে বিআরআই প্রকল্প গ্রহণ করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। এর অধীনে অর্থনৈতিকভাবে উদীয়মান দেশগুলোকে বন্দর, সড়ক ও সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করা হচ্ছে। রবিবার জার্মানিতে জি৭ দেশের শীর্ষ নেতারা আলোচনায় বসেন। ৬০ হাজার কোটি ডলারের পরিকাঠামো তহবিলই ছিল সেখানে প্রথম ঘোষণা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানিয়েছেন, ‘এই বিনিয়োগের ফলে সবাই লাভবান হবেন। আমেরিকার মানুষও লাভবান হবেন। সার্বিকভাবে আমাদের অর্থনীতি লাভবান হবে।’ আলপাইন অঞ্চলের এলমাউ দুর্গে বৈঠকের প্রথম দিনেই জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস ভাষণ দেন। তিনি বলেছেন, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই পরিকাঠামোগত পরিকল্পনা খুব জরুরি। রাশিয়া এখন শক্তিকে (তেল-গ্যাস-কয়লা) একটা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। তাদের মোকাবিলায় এই পরিকল্পনা নেওয়া দরকার ছিল।