শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

রাশিয়ার গ্যাসে স্বস্তি ইউরোপে

নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনে সরবরাহ শুরু

রাশিয়ার গ্যাসে স্বস্তি ইউরোপে

রাশিয়ার ছায়া থেকে আপাতত মুক্তি পাচ্ছে না ইউরোপ। তা হারে হারে টেরও পেল ইউরোপ। কারণ রাশিয়ার জ্বালানি ছাড়া ইউরোপ চলছে না। মাত্র ১০ দিন বন্ধ ছিল নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইন। এই সময় ত্রাহি অবস্থা শুরু হয় ইউরোপে। রাশিয়া বলছে তারা পাইপলাইন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এই সময় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। গতকাল থেকে এই পাইপলাইন দিয়ে ফের গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। গ্যাস সরবরাহ শুরু করার পর রাশিয়া জানিয়েছে, সক্ষমতার মাত্র ৪০ ভাগ গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। রাশিয়া ইউরোপের প্রায় ৪০ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করে থাকে।   ভবিষ্যতে তা আরও কমতে পারে।

বিবিসি জানিয়েছে, প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়। তাই শীতের তুলনায় এই সময় গ্যাসের সরবরাহ কম থাকে। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি ইউরোপের জন্য চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।   এ ছাড়া রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের এক কথায়  উদ্বেগ বাড়ে ইউরোপে।

সম্প্রতি পুতিন বলেছিলেন, এই পাইপলাইনের টারবাইন মেরামতের জন্য কানাডায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে এলে টারবাইনের অবস্থা কেমন থাকবে, সে বিষয়ে তিনি পরিষ্কার নন। তিনি আরও বলেন, ঝুঁকি আছে, তাই নর্ড স্ট্রিম-১ পুনরায় চালু নাও হতে পারে। পুতিনের কথার পরিপ্রেক্ষিতে সতর্ক হয় ইউরোপ।

এদিকে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মস্কোর ওপর যে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তার পাল্টায় রাশিয়া ইউরোপের দেশগুলোতে গ্যাস বন্ধ করে দিতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। মস্কোর পাল্টা পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এবারের বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণের সময় বাড়ানো হতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ পুনরায় শুরু কবে হবে তা নিয়ে ইউরোপের দেশগুলোর উৎকণ্ঠার চিত্র পশ্চিমা গণমাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই এসেছে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে বছরে ৫ হাজার ৫০০ কিউবিক মিটার গ্যাস পাঠানো হয়। ১১ জুলাই থেকে বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল।

এদিকে গ্যাসের সরবরাহ নিয়ে রাশিয়ার ওপর বিশ্বাস রাখতে পারছে না জার্মানিসহ ইউরোপের কোনো দেশই। জার্মানির মন্ত্রীরাও জানেন, আগামী শীতের জন্য তাদের কাছে গ্যাসের পর্যাপ্ত মজুদ নেই। এ কারণে নেতারা মানুষকে জ্বালানি সাশ্রয়ের আহ্বান জানাচ্ছেন।

এ ছাড়া তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানি করে ও পুরনো কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র নতুন করে চালু করেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে জার্মানি। অন্যদিকে শিল্পনেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, গ্যাসের ঘাটতি মন্দা ডেকে আনতে পারে।

সর্বশেষ খবর