সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

আবার আলোচনায় পরমাণু অস্ত্র

আবার আলোচনায় পরমাণু অস্ত্র

ইউক্রেনে চলা সামরিক অভিযানে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তার বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারেন, এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন পশ্চিমা নেতারা। সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মস্কোকে সতর্ক করে বাইডেন বলেছেন, এমন পদক্ষেপের ফলে যুদ্ধের প্রকৃতি বদলে যাবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এমন কিছু আর ঘটেনি। আর মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনাগুলো পড়ুন। যেখানে সব লেখা আছে’। তিনি বলেন, রাশিয়ার পারমাণবিক নীতিতে পারমাণবিক অস্ত্র শুধু প্রতিরোধমূলক অস্ত্র হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে। এগুলো ব্যবহারের চারটি ক্ষেত্রের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো- রাশিয়া বা মিত্রদের ভূখণ্ডে ব্যালস্টিকি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, রাশিয়া বা মিত্রদের বিরুদ্ধে পারমাণবিক বা গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার, রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বা সামরিক স্থাপনায় হামলা, যার ফলে পারমাণবিক সক্ষমতা হুমকির মুখে পড়ে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করে আগ্রাসনের ফলে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব যদি হুমকির মুখে পড়ে।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন তার দেশের পরমাণু শক্তিকে ‘বিশেষ সতর্কাবস্থায়’ রাখার কথা ঘোষণা করেছিলেন। রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধানদের তিনি বলেছিলেন পশ্চিমা বিশ্বের ‘আগ্রাসী মনোভাবের’ কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সম্প্রতি রুশ সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে ইউক্রেনের কিছু এলাকা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পর পশ্চিমা দেশগুলোতে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট পুতিন হয়তো এখন আরও কট্টর কৌশল গ্রহণ করতে পারেন।

প্রায় ৮০ বছর ধরে বিশ্বে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। অনেক দেশই এই অস্ত্রকে তাদের জাতীয় নিরাপত্তার রক্ষাকবচ হিসেবে মনে করে। ধারণা করা হয় যে, রাশিয়ার কাছে ৫ হাজার ৯৭৭টি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড বা পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। এই হিসাব দিয়েছে মার্কিন বিজ্ঞানীদের একটি ফেডারেশন। সিবিএসের ৬০ মিনিট অনুষ্ঠানের জন্য জো বাইডেন হোয়াইট হাউসে সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন। এ সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয় ইউক্রেনের যুদ্ধে প্রেসিডেন্ট পুতিন যদি গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করে থাকেন তাহলে এ বিষয়ে তিনি তাকে কী বলবেন। ‘করবেন না, করবেন না, করবেন না,’ এভাবেই জবাব দেন জো বাইডেন। এর পর বাইডেনের কাছে জানতে চাওয়া হয় পুতিন যদি সেই সীমারেখা অতিক্রম করেন তাহলে তার জন্য এর পরিণতি কী হতে পারে? তবে সত্যিই যদি রাশিয়া পারমাণবিক হামলা করে তাহলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে- সে সম্পর্কে কোনো ধারণা দেননি প্রেসিডেন্ট বাইডেন। অবশ্য বাইডেন মন্তব্য করেন, ‘আপনি কি মনে করেন যে এটা যদি আমি সত্যি সত্যি জানি তাহলে সেটা আমি আপনাকে বলব? আমি সেটা আপনাকে বলব না। তবে এর পরিণতি তো আছেই।’ সম্প্রতি ইউক্রেন দাবি করেছে যে, তারা রুশ বাহিনীর কাছ থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভের ৮ হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা পুনর্দখল করেছে।

তার পরেও প্রেসিডেন্ট পুতিন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ইউক্রেনীয় বাহিনীর পাল্টা আক্রমণের সাফল্য দেশটির পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পরিকল্পনাকে থামাতে পারবে না।

সর্বশেষ খবর