রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কোরীয় দ্বীপে বোমারু বিমান মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের

কোরীয় দ্বীপে বোমারু বিমান মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা শেষে উত্তর কোরিয়ার শীর্ষনেতা কিম জং উনের হুমকির পর এবার বড় পদক্ষেপ নিল যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ আকাশ প্রতিরক্ষা মহড়ার জন্য কোরীয় দ্বীপে পুনরায় বি-১বি বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী এমনটাই জানিয়েছে। বলা হয়েছে, পিয়ংইয়ং আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের এক দিন পর গতকাল এই বিমান মোতায়েন করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের এক বিবৃতিতে   বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথ বিমান মহড়া পরিচালনা করেছে। যৌথ এই মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান বাহিনীর এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানসহ আরও অত্যাধুনিক কিছু বিমানও অংশ নিয়েছে।   মহড়ায় কোরীয় দ্বীপে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর বি-১বি বোমারু বিমানও মোতায়েন করা হয়। এর আগে একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টা পর কিম জং উন বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি মোকাবিলায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। শুক্রবার তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এদিন উত্তর কোরিয়া এমন একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র জাপান সাগরে নিক্ষেপ করে- যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম। ক্ষেপণাস্ত্রটি হোক্কাইডোর ২১০ কিলোমিটার পশ্চিমে জাপান সাগরে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র এর তীব্র নিন্দা জানায়। একই সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়াও শক্ত পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয়।

আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা দেখলেন কিম : উত্তর কোরিয়ার নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা পরিদর্শনে গিয়ে দেশটির শীর্ষনেতা কিম জং উন পারমাণবিক অস্ত্র দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক হুমকি মোকাবিলার অঙ্গীকার করেছেন। গতকাল দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ কিমের এ অঙ্গীকারের কথা জানায়। বৃহস্পতিবার কোরীয় উপদ্বীপ ও এর আশপাশের অঞ্চলে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনসহ নিজেদের নিরাপত্তা উপস্থিতি জোরদার করার ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন। এর প্রতিক্রিয়ায় ‘কঠোর সামরিক জবাবের’ হুঁশিয়ারি দেওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে একটি স্বল্প পাল্লার ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। পরদিন শুক্রবার পিয়ংইয়ং তাদের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হোয়াসং-১৭’র পরীক্ষা চালায়। সেই উৎক্ষেপণ কিম তার ‘স্ত্রী ও মেয়েকে’ নিয়ে দেখেছেন বলে জানিয়েছে কেসিএনএ। এএফপি, রয়টার্স

মেয়ের সঙ্গে কিমের ছবিও প্রকাশ করেছে তারা। এ ছবির মাধ্যমেই কিমের মেয়েকে প্রথমবার প্রকাশ্যে দেখা গেল, বলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। কিমের এ মেয়ের নাম কিম চুয়ে এবং তার জন্ম ২০১৩ সালে। সাদা জ্যাকেট ও লাল জুতা পরিহিত কিম চুয়ে বাবার সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন এবং পরে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষায় আনন্দে উদ্বেলিত হন। মেয়েকে নিয়ে প্রথমবার উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে যাওয়া কিম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বৈরী নীতির ফলে সৃষ্ট হুমকির কারণেই তার দেশকে ‘অনন্য পারমাণবিক প্রতিরোধ জোরদার উল্লেখযোগ্যভাবে ত্বরান্বিত’ করতে হয়েছে। কিম জং উন দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেছেন যে, যদি শত্রুরা হুমকি অব্যাহত রাখে, তাহলে আমাদের দল ও সরকার পারমাণবিক অস্ত্র দিয়েই পারমাণবিক শক্তির প্রতিক্রিয়া দেখাবে এবং সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে, বলেছে কেসিএনএ। হোয়াসং-১৭ এর উৎক্ষেপণকে ‘সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রবল পারমাণবিক প্রতিরোধ’ সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া প্রতিরক্ষা নির্মাণ কৌশলের’ অংশ বলেছে উত্তর কোরিয়ার বার্তা সংস্থা; তারা একে ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর কৌশলগত অস্ত্র’ বলেও অভিহিত করেছে। শুক্রবার ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি ৬০৪১ কিলোমিটার উচ্চতায় উঠে এবং ৬৯ মিনিটে প্রায় হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়, বলেছে কেসিএনএ। এর আগে জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসুকাজু হামাদা বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়ার এ হোয়াসং ক্ষেপণাস্ত্রটি ১৫ হাজার কিলোমিটারের মতো পথ পাড়ি দিতে সক্ষম বলেই তারা মনে করছেন।

 

সর্বশেষ খবর