ইউক্রেনে গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া দেশটির অধিকাংশ এলাকা দখল করে নেয়। কিন্তু সে এলাকাগুলো বেশি দিন ধরে রাখেনি। এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য এলাকা ছিল খেরসন, স্নেক আইল্যান্ড, খারকভ। রাশিয়া এগুলো ছেড়ে দেওয়ার পর তা ফেল দখলে নেয় ইউক্রেন। এরমধ্যে দোনেৎস্ক ও লুহান্সকেও বেশকিছু জমি খুইয়েছে রাশিয়া। তবে এবার হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া মস্কো বলে খবর। আক্রমণের ঝাঁজ আরও বাড়াতে এবার ইউক্রেনের উদ্দেশে শয়ে শয়ে ট্যাঙ্ক ও নতুন বাহিনী পাঠাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন।
রয়টার্স সূত্রে খবর, গতকাল খেরসনে অন্তত ৩৩টি রকেট হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভের অভিযোগ, মূলত সাধারণ মানুষকে নিশানা করেছে রুশ সেনা। রুশ বাহিনীর তুমুল গোলাবর্ষণের মুখে বড়দিনের সময় থেকে ৪০০’রও বেশি মানুষ খেরসন ছেড়ে গেছে। গত মঙ্গলবার একটি মাতৃসদন হাসপাতালে গোলা হামলায় কেউ আহত না হলেও মানুষের আতঙ্ক বেড়ে গেছে। শত শত মানুষ নিজেরাই পালিয়ে যাচ্ছে। খেরসন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথের চেকপয়েন্টগুলোতে দেখা যাচ্ছে সারি সারি গাড়ি।
এসব গাড়িতে আছেন নগরীর ভীত, সন্ত্রস্ত অধিবাসীরা। এক অধিবাসী বিবিসি সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আমরা আর এ পরিস্থিতিতে থাকতে পারছি না। তীব্র গোলা হামলা হচ্ছে। আমরা পুরো সময়টাই এখানে ছিলাম এবং ভেবেছিলাম এই দুর্যোগ পার হয়ে যাবে এবং আমরা বেঁচে যাব। কিন্তু আমাদের পাশের বাড়িতেই গোলা পড়ল। আমার বাবার বাড়িতেও গোলা পড়েছে।’ এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, শীতকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাচ্ছে রাশিয়া। তাদের মতে, এখন কিয়েভে তাপমাত্রা শূন্যের নিচে। ফলে ঘর গরম রাখতে ও পানির পাইপগুলোকে সচল রাখতে বিদ্যুতের প্রয়োজন। সেই দুর্বল জায়গাতেই আঘাত করছে রাশিয়া। এভাবে জনতার মনোবল ভাঙতে চাইছে পুতিন বাহিনী। শুধু তাই নয়, ঠান্ডায় ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ঘিরে ফেলার একটি পরিকল্পনাও করছে রুশ সেনা। নতুন করে সামরিক অভিযান নিয়ে জেলেনস্কিদের সতর্ক করে অনেকেই।
দাম বেঁধে দিলে তেল বিক্রি করবে না রাশিয়া : জি৭ দেশগুলো থেকে ইইউ পর্যন্ত অনেকেই রাশিয়ার তেলের দাম বেঁধে দিয়েছে। ব্যারেল প্রতি ৬০ ডলার। গত ৫ ডিসেম্বর থেকে এই সিদ্ধান্ত চালু হয়েছে। কিন্তু রাশিয়া এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ঠিক করেছে, তারা ওই সব দেশে তেল পাঠাবে না। রাশিয়ার তেল পেতে হলে, দাম বেঁধে দেওয়া চলবে না। আন্তর্জাতিক বাজারে এখন তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলার। তবে ভারত ও চীন এখন রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ অনেকটাই বাড়িয়েছে।
বিবিসি জানাচ্ছে, গত নভেম্বরে চীন দিনে ১০ লাখ ব্যারেল তেল কিনেছে, ভারত কিনেছে ৯ লাখ ব্যারেল।