বুধবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবার জনসংখ্যা কমল চীনে

জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো পূর্ব এশীয় দেশগুলোতেও জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে। একইসঙ্গে জনসংখ্যার গড় বয়স তথা বার্ধক্য বাড়ছে। এবার এই প্রবণতা দেখা গেল বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনে। গত ৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো চীনের জনসংখ্যা পড়তির মুখ দেখল। জাতীয় জন্মহার রেকর্ড পরিমাণ কমেছে, প্রতি ১ হাজারে মাত্র ৬.৭৭ জন। ২০২২ সালে চীনের জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪১ কোটি ১৮ লাখ, ২০২১ সালের তুলনায় যেটি ৮ লাখ ৫০ হাজার কম।

চীনে ১৯৬১ সালের পর সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটল। ওই বছরটি ছিল দেশটির মহাদুর্ভিক্ষের শেষ বছর। চীনের জনসংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে এ বছরই ভারত বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ মেয়াদে ২০৫০ সাল নাগাদ চীনের জনসংখ্যা ১০ কোটি ৯০ লাখের মতো কমতে পারে। ২০১৯ সালে করা পূর্বাভাসের চেয়ে এই হ্রাসের সংখ্যা তিন গুণের বেশি।

কেন কমছে জনসংখ্যা : চীনের জনসংখ্যা কমে যাওয়ার একাধিক কারণ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে ১৯৮০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চাপিয়ে দেওয়া এক সন্তান নীতি। পাশাপাশি শিক্ষার আকাশ ছোঁয়া ব্যয়ের কারণেও একটির বেশি সন্তান নেননি অনেক নাগরিক। এমনকি কেউ কেউ কোনো সন্তানই নেননি। গতকাল জনসংখ্যার নতুন পরিসংখ্যান প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল। ‘সন্তান নেওয়া কি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ?’ এমন একটি হ্যাশট্যাগ চালু হয়েছে, যা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। জয়ফুল নেড নামের একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘নারীরা যে কারণে সন্তান নিতে চান না, সে মূল কারণটার জন্য তাঁরা দায়ী নন। বরং সেটার জন্য দায়ী সন্তান লালন-পালনে সমাজ এবং পুরুষের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যর্থতা। যেসব নারী সন্তান জন্ম দেন, তাঁদের জীবনযাপনের মান ও আধ্যাত্মিক জীবনবোধ মারাত্মকভাবে কমে যায়।’ ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইউ সু জানান, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে এবং কভিডের পরে অবস্থা সম্ভবত আরও খারাপ হবে। আগামী বছরগুলোতেও চীনের জনসংখ্যা কমতে থাকবে এমন আশা করা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সু একজন।

 

সর্বশেষ খবর