সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
আদানি গ্রুপের দুর্নীতি

গৌতমকে সামনে রেখে অন্তরালে কাজ করেছেন বড় ভাই বিনোদ

গৌতমকে সামনে রেখে অন্তরালে কাজ করেছেন বড় ভাই বিনোদ

বিনোদ আদানি

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে এবার আদানি গ্রুপের ‘মাল্টি-বিলিয়ন ডলার জালিয়াতিতে আদানি পরিবারের সদস্যদের ভূমিকাকে সামনে নিয়ে এসেছেন। তাতে বলা হয়েছে, গ্রুপের প্রতারণা ক্ষেত্রে মূল খেলোয়াড় গৌতম আদানি নন, বরং তার বড় ভাই বিনোদ আদানি। ছোটভাইকে সামনে রেখে মূল কাজ করেছেন বিনোদ। তিনি অন্য দেশে অফসোর কোম্পানি খুলে ভারতের অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন এবং তিনি নিজেও ভারতে থাকেন না। বিনোদ সাইপ্রাসের পাসপোর্টধারী ও সিঙ্গাপুরে স্থায়ী বসবাস করেন।

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের জানুয়ারি মাসের শেষে প্রকাশিত হওয়া প্রতিবেদনে আদানি গ্রুপের ৬০ বছর বয়সী চেয়ারম্যান গৌতম আদানির নাম ৫৪ বার উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতি এবং স্টক ম্যানিপুলেশনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্যদিকে, ওই একই প্রতিবেদনে চেয়ারম্যানের তুলনামূলক কম পরিচিত ভাই বিনোদ আদানির নাম উল্লেখ করা হয়েছে ১৫১ বার, যা অন্য যে কোনো ব্যক্তির তুলনায় বেশি। কারণ তাদের দাবি অনুযায়ী, কেলেঙ্কারি গৌতম আদানিকে সাম্প্রতিক সময়ে খবরের শিরোনাম বানিয়েছে, সে কেলেঙ্কারির একেবারে কেন্দ্রে গৌতম আদানি নন, রয়েছেন বিনোদ আদানি।

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিনোদ ‘অনেকগুলো অফশোর কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে সেগুলোর সাহায্যে এক গোলকধাঁধা তৈরি করেছেন’, যার সাহায্যে ‘ভারতে থাকা আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলো থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সরানো হয়েছে, আর এর বেশির ভাগ লেনদেনই হয়েছে গোপনে’। এর ফলে আদানি গ্রুপ ভারতীয় আইনকে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এই আইন অনুযায়ী, কোনো পাবলিক-ট্রেডিং স্টকে থাকা কোম্পানির কমপক্ষে ২৫ শতাংশ শেয়ার ওই কোম্পানির মালিকের সঙ্গে জড়িত কারও অধীনে থাকতে পারবে না। তবে আদানি গ্রুপ তাদের চেয়ারম্যানের ভাইয়ের সঙ্গে মালিকানার সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন। হিন্ডেনবার্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পাঁচ দিন পর এর পাল্টা প্রত্যুত্তরে লেখা ৪১৩ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে আদানি গ্রুপ দাবি করে, ‘বিনোদ আদানি পাবলিক লিস্টে থাকা আদানি গ্রুপের কোনো প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার পদে নেই, এমনকি এসব প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত কার্যক্রমেও তার কোনো অংশগ্রহণ নেই।’

তবে প্রতিবেদনে বলা হয়, আদানি সাম্রাজ্যের পাবলিক ফেস হলেন গৌতম আদানি, অন্যদিকে বিনোদ আদানি কাজ করেন পর্দার আড়ালে। তার খুব কম ছবিই ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। সাইপ্রাসের পাসপোর্টধারী এবং সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা বিনোদের বেশ কিছু নাম রয়েছে, যার মধ্যে একটি হলো বিনোদ শান্তিলাল শাহ। যদিও তার জন্মসাল কবে তা এখনো একটি রহস্য রয়ে গেছে।

সর্বশেষ খবর