শুক্রবার, ২৬ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
কঠিন পরীক্ষায় ইমরান

কেন দল ছাড়ছেন হেভিওয়েট নেতারা?

কেন দল ছাড়ছেন হেভিওয়েট নেতারা?

কঠিন পরীক্ষায় পড়েছেন ইমরান খান। দলের হেভিওয়েট নেতারা একে একে তাকে ছেড়ে যাচ্ছেন। দলের প্রধান মুখপাত্র ফাওয়াদ চৌধুরী, সাবেক মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রী শিরিন মাজারিসহ দলের কমপক্ষে দুই ডজন সাবেক মন্ত্রী, এমপি ইমরান খানের দল ত্যাগ করেছেন। দলের সেক্রেটারি জেনারেল আসাদ উমর এ পদ ত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এ অবস্থায় গোটা বিশ্বের চোখ এখন পাকিস্তানের দিকে। ইমরানের নেতারা দল ছেড়ে যাওয়ার পর পিটিআই প্রধান টুইটে এক সমর্থক লেখেন: ‘আমরা সবাই পাকিস্তানে জোরপূর্বক বিয়ের কথা শুনেছি। কিন্তু পিটিআই-এর জন্য নতুন একটি ঘটনার দেখা মিলছে, জোরপূর্বক ডিভোর্স।’ নেতাদের দল ছাড়ার ঘটনায় পিটিআই এ জন্য সরকারের নিরবচ্ছিন্ন হয়রানিকে দায়ী করেছে।

মঙ্গলবার ইসলামাবাদের এক আদালতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইমরান খান অভিযোগ করেন, তার দলের নেতাদের দল ছাড়ার জন্য জোর করা হচ্ছে। তবে এ জোর করার পেছনে কারা সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি। তবে তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘মানুষ দলত্যাগ করছেন না, তাদের বন্দুকের মুখে দল ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। এ কৌশলে রাজনৈতিক দলকে ভাগ করা যায় না।’ খানের একজন প্রধানতম সহযোগী শিবলি ফারাজ আল জাজিরাকে বলেন, কিছু ‘ভালো লোক’ দল ছেড়ে চলে যাওয়া দুঃখজনক বটে, তবে বিষয়টিকে তিনি আশীর্বাদ হিসেবেও দেখছেন। ‘অনেকেই ছিলেন সুযোগসন্ধানী। তারা দলের সম্পদ নয় বরং বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন’ ফারাজ বলেন। তিনি বলেন, এ দলত্যাগের কোনো প্রভাব আসন্ন সাধারণ ও প্রাদেশিক নির্বাচনে পিটিআই-এর ওপর পড়বে না। ফারাজ ইমরান খানকে পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে উল্লেখ করেন।

গত বছরের এপ্রিলে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর ক্ষমতাচ্যুত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এরপর থেকেই নির্বাচনের দাবিতে সারা দেশে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছেন তিনি।

তবে গত কয়েক দিনের ঘটনার পর গতকাল ফের সামনের সাড়িতে চলে এসেছে দেশটির বিচার বিভাগ। গতকাল নতুন এক সতর্কতা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্বাচন বিলম্বিত করলে অপশক্তির উত্থান ঘটবে দেশে। তারা দেশজুড়ে অরাজকতা শুরু করবে। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন ১৪ মে করার রায় দিয়েছিল।

তা নিয়ে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। এর শুনানি হয় গতকাল। এ দিন নিরাপত্তা এবং পর্যাপ্ত তহবিলের অভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে অক্ষমতার কথা জানায় নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে তারা জানায়, নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্ব নয়।

ওদিকে জোর গুজব আছে যে, সেনাবাহিনীর চাপে ইমরান খানের দলের নেতারা একে একে পদত্যাগ করছেন। এমন অবস্থায় বুধবার যখন সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও পিটিআইয়ের প্রধান মুখপাত্র ফাওয়াদ চৌধুরী পদত্যাগের ঘোষণা দেন, তখন ইমরান খান দেশের যে কারও সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা বলেন। তবে তাতে কোনো পক্ষ সায় দিয়েছে কি না তা জানা যায়নি। এর পরই গভীর রাতে দলের সেক্রেটারি জেনারেল পদ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন আসাদ উমর। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যে জন্য আমি (পদ) ছাড়ছি তার একটি কারণ হলো, আমি খুব কথা বলি। যদি পদ ধরে রাখি, তাহলে ব্যক্তিগত বক্তব্য দিতে পারব না। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ইসলামাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেল থেকে মুক্তি পান। তার পরই ওই সংবাদ সম্মেলন করেন। মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে আদালত তাকে নির্দেশনা দিয়েছেন যে, মুক্তি পাওয়ার পর তিনি সহিংস প্রতিবাদ বিক্ষোভের অংশ হবেন না।

সর্বশেষ খবর