ভারতসহ কয়েকটি দেশের নভোচারীদের নিয়ে এক্সিওম-৪ অভিযান মহাকাশে যাত্রা শুরুর পরপরই উৎফুল্ল ভারতীয়রা উল্লাসে ফেটে পড়ে। কেননা এ অভিযানে পাইলটের দায়িত্বে থাকা গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা যে হতে যাচ্ছেন মহাকাশ ভ্রমণ করা দ্বিতীয় ভারতীয়।
গতকাল ভারতীয় সময় দুপুর ১২টা ১ মিনিটে তাদের মহাকাশযানটি ফ্লোরিডায় অবস্থিত নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু করে, হিসাব অনুযায়ী আজ এটির আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে অবতরণের কথা। ঠিকঠাক সব হলে শুক্লা হবেন প্রথম ভারতীয় যিনি কক্ষপথে থাকা নাসার গবেষণাগারটি দেখার সুযোগ পাবেন, লিখেছে বিবিসি। এর আগে ১৯৮৪ সালে প্রথম ভারতীয় রাকেশ শর্মা রাশিয়ার সয়ুজ যানে চেপে মহাকাশ পাড়ি দিয়েছিলেন। শুভাংশু শুক্লা যে দলের অংশ হয়ে মহাকাশ যাচ্ছেন, সেটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন নভোচারী পেগি হুইটসন। দুই দফা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করা পেগি ৬৭৫ দিনের বেশি সময় মহাকাশে কাটিয়েছেন, স্পেস ওয়াক (মহাকাশযান বা স্টেশনের বাইরে মহাশূন্যে ভেসে কোনো কাজ) করেছেন ১০ বার।-বিবিসি
এক্স-৪ এ চেপে আইএসএসে যাওয়ার এই বাণিজ্যিক ফ্লাইটটি পরিচালনা করছে হিউস্টনভিত্তিক বেসরকারি কোম্পানি এক্সিওম স্পেস, অভিযানটি সম্পন্ন হচ্ছে নাসা, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) ও স্পেসএক্সের সহায়তায়। অভিযানে অংশ নেওয়া চারজনের দলে আরও রয়েছেন পোল্যান্ডের স্লাভস উজনানস্কি-উইজনিয়েভস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবর কাপু। এই দুই দেশ থেকেও কেউ মহাকাশে যাচ্ছে চার দশক পর।
গতকাল যাত্রা শুরুর আগে কয়েক সপ্তাহ এই নভোচারীদের কোয়ারেন্টিনে কাটাতে হয়েছে। এ অভিযান ঘিরে ভারতজুড়ে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। ইসরো বলছে, আইএসএস ভ্রমণে গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লা যে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে যাচ্ছেন তা তাদের মহাকাশ গবেষণায়ও ব্যাপক সহযোগিতা করবে। ভারত ২০২৭ সালে প্রথমবার মনুষ্যবাহী মহাকাশযান পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। সেখানে কাকে পাঠানো হবে তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা হয়েছে গত বছর, ওই তালিকায় ভারতীয় বিমান বাহিনীর যে চার কর্মকর্তা স্থান পেয়েছেন তার মধ্যে ৩৯ বছর বয়সী শুক্লাও আছেন। ভারতের ২০৩৫ সালের মধ্যে মহাকাশে একটি স্টেশন নির্মাণ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে নভোচারী পাঠানোর মতো উচ্চাকাক্সক্ষী সব পরিকল্পনা রয়েছে।