ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ২১ মাস ধরে চলা যুদ্ধের পর গতকাল গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, রাতভর ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। গাজা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরায়েল সম্প্রতি গাজা উপত্যকায় তাদের সামরিক অভিযান বাড়িয়েছে। এ যুদ্ধ উপত্যকার ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দার জন্য ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-মুগাইর এএফপিকে জানিয়েছেন, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের কাছে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাঁবুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক শিশুসহ সাতজন নিহত হয়েছেন।
মুগাইর আরও বলেন, ইসরায়েল শুক্রবার ভোরে খান ইউনিসের উপকূলে তাঁবুতে আরও দুটি হামলা চালিয়েছে। হামলায় দুটি শিশুসহ আটজন নিহত হয়েছেন।
এএফপি যোগাযোগ করলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, নির্দিষ্ট আক্রমণের বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবে না। তবে তারা জানায়, হামাসের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করার জন্য তারা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগের দিন বৃহস্পতিবার গাজার বেসামরিক সুরক্ষা সংস্থা জানায়, একদিনে ইসরায়েলি হামলায় ৭৩ জন নিহত হয়েছে।
গাজায় গণমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ ও অনেক এলাকায় প্রবেশের অসুবিধার কারণে এএফপি নিহতদের সংখ্যা এবং বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার দেওয়া বিবরণ যাচাই করতে পারেনি। ইসরায়েলের নেতারা হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্যে অটল রয়েছেন। যদিও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটি বৃহস্পতিবার জানিয়েছে যে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ইসরায়েল হামাসের সঙ্গে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এর মাধ্যমে গাজায় আটক যেসব জিম্মি এখনো মুক্ত হয়নি, তাদের মুক্তির পথ খুলতে পারে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অবশিষ্ট বন্দিদের ফিরিয়ে আনার জন্য দেশের ভিতর থেকে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছেন। -এএফপি
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে অপহৃত ২৫১ জিম্মির মধ্যে ৪৯ জন এখনো গাজায় আটক আছেন, যার মধ্যে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে ২৭ জন মৃত।
ইসরায়েলি সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এএফপির এক হিসাব অনুসারে, ২০২৩ সালে হামাসের আক্রমণে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
হামাস নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযানে গাজায় অন্তত ৫৭ হাজার ১৩০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ এ পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে।