দিল্লিসহ বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোয় বাঙালির ওপর অত্যাচার, নিপীড়ন, বিদ্বেষের অভিযোগ তুলে আগেই সরব হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বাংলা ভাষার ওপর সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিজেপিকে নিশানা করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এবার ওইসব রাজ্যে অবস্থান করা বাঙালিদের রাজ্যে ফিরে আসার আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা ব্যানার্জি বলেন ‘প্রয়োজনে জীবন দেব, কিন্তু আমার ভাষা কেড়ে নিতে দেব না। আমাদের বাংলা ভাষা আমাদের অস্মিতা, আমাদের জীবন, আমাদের সম্পদ, জাতির মেরুদণ্ড। বাংলার মাটিতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো মনীষীরা জন্মগ্রহণ করেছেন। সেখানে বাংলাকে কীভাবে অবজ্ঞা করেন? কীভাবে বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য মানুষের ওপর অত্যাচার করেন? এ জিনিস চলতে পারে না।’ গতকাল রাজ্যটির বীরভূম জেলার বোলপুরে বাংলা ভাষার সম্মান রক্ষার্থে জনমিছিল শেষে জনসাধারণের উদ্দেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মুম্বাই, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, হরিয়ানা, আসামে থাকার কোনো দরকার নেই। যারা ভালোবাসে না, যারা আপনাদের চায় না, আপনাদের ওপর অত্যাচার করে, আপনারা কেন সেখানে থাকবেন? আপনারা বাংলায় ফিরে আসুন, আপনাদের দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। আপনাদের জন্য নতুন স্কিম করা হবে। আপনাদের কাজে লাগানো হবে। আপনাদের বাঁচার সুযোগ করে দেওয়া হবে।’ মমতার প্রশ্ন-‘বাংলায় কথা বললেই কি বাংলাদেশি হয়ে যায়? বাংলাদেশের ভাষা তো আমিও বলতে পারি, তাতে কী যায় আসে? অসুবিধারই বা কী আছে?’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ভাষা নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে এনআরসির নাম করে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে অস্তিত্ব বিপন্ন করে তার ঠিকানা কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত হলে আমরা ঠেকাব। এজন্য সবাইকে রাস্তায় নামতে হবে।’
বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে মমতা বক্তব্য, ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকারের নেতারা বলছেন ভোটার তালিকা থেকে দেড় কোটি নাম বাদ দিয়ে দাও। কারণ এরা সব রোহিঙ্গা নাগরিক। কিন্তু আমার প্রশ্ন-এরা কোথা থেকে এলো? কয়েক বছর আগে জাতিসংঘ বলেছিল রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখ। এখন সেটা বেড়ে হয়তো ১৭ লাখ হয়েছে। এ রোহিঙ্গারা মূলত মিয়ানমারের নাগরিক। বর্তমানে প্রায় ৯ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।’
নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘আপনি যখন আবুধাবিতে যান, তখন সেখানকার শেখকে গলায় জড়িয়ে ধরেন।’