ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও তার সরকারের বিরুদ্ধে সম্মিলিত ধর্মঘটে নেমেছে দেশটির বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন। গতকাল এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন দেশটির শিক্ষক, ট্রেনচালক, ফার্মাসিস্ট এবং হাসপাতাল কর্মীরা। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরাও এতে যোগ দিয়েছেন। আসন্ন বাজেট কাটছাঁটের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। ম্যাক্রোঁ এবং তার নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্টিয়ান লেকর্নু বাজেট কাটছাঁট নিয়ে সংসদে চাপের মুখে পড়েছেন। একই সঙ্গে ইউরোজোনের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির ঘাটতি নিয়ে বিনিয়োগকারীরাও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের সরকারের আর্থিক পরিকল্পনা বাতিলসহ জনসেবা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি, ধনীদের ওপর কর বৃদ্ধি এবং পেনশনের সময়সীমা বাড়ানোয় যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন পেশাজীবীরা। ধর্মঘটের ফলে প্যারিসসহ দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো অস্থির হয়ে ওঠার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কেননা গতকাল শহরটির মেট্রো লাইন দিনের বেশির ভাগ সময়ই বন্ধ ছিল। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরাও এ ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ধর্মঘট ঠেকাতে তারা মাঠে রয়েছে। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রীদের একটি সূত্র বলছে, পুলিশ এবং আন্দোনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন তারা।
সিজিটি ইউনিয়নের প্রতিনিধি বাসচালক ফ্রেড বলেন, বর্তমান সরকার এবং প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যেভাবে শ্রমিকদের প্রতি অবজ্ঞা দেখাচ্ছেন, তা চলতে পারে না। একই সমাবেশে ৩৩ বছর বয়সি শিক্ষক গেয়েতঁ লেগে বলেন, আমি জনসেবা রক্ষার জন্য এখানে এসেছি। বিশেষ করে, আমি দাবি করছি যে জনগণের অর্থ যেন বড় বড় কোম্পানি বা অতি-ধনীদের কর ছাড়ের মতো সুবিধার বদলে জনসেবা খাতেই ফেরত আসে। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, ধর্মঘট এবং বিক্ষোভে প্রায় ৮ লাখ মানুষ অংশ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির প্রধান প্রধান ইউনিয়নগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে পূর্ববর্তী সরকারের নিষ্ঠুর এবং অন্যায্য আর্থিক পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, আমরা যে শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব করি, তারা খুবই ক্ষুব্ধ। গত বছর ফ্রান্সের বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্ধারিত ৩ শতাংশ সীমার প্রায় দ্বিগুণ ছিল। লেকর্নু এই ঘাটতি কমাতে চাইলেও আইন প্রণয়নের জন্য তাকে অন্যান্য দলের ওপর নির্ভর করতে হবে। তাই ২০২৬ সালের বাজেট নিয়ে পার্লামেন্টে সমর্থন আদায় করতে তাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে।-রয়টার্স
লেকর্নুর পূর্বসূরি ফ্রাঁসোয়া বেয়ারু তার ৪৪ বিলিয়ন ইউরোর বাজেট সংকোচনের পরিকল্পনার কারণে গত সপ্তাহে পার্লামেন্ট দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী বেয়ারুর পরিকল্পনা নিয়ে কী করবেন তা এখনো স্পষ্ট করে জানাননি, তবে তিনি আপস করার আগ্রহ দেখিয়েছেন। -রয়টার্স