৩ আগস্ট, ২০২২ ০৭:৪৭

মহররমে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন রসুল (সা.)

মোহম্মাদ ওমর ফারুক

মহররমে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন রসুল (সা.)

হিজরি সন চান্দ্র সন। শরিয়তের আহকামের ক্ষেত্রে চান্দ্রমাসের গুরুত্ব অপরিসীম। চান্দ্রমাসের হিসাবমতেই হজ, রোজা প্রভৃতি আদায় করতে হয়। তবে কোরআন মজিদ চন্দ্রকে যেমন, তেমনি সূর্যকেও সাল তারিখ ঠিক করার মানদন্ডরূপে অভিহিত করেছে। সুতরাং চন্দ্র ও সূর্য উভয়টির মাধ্যমেই সন-তারিখ নির্দিষ্ট করা জায়েজ। তবে চন্দ্রের হিসাব আল্লাহর কাছে অধিকতর পছন্দনীয় হওয়ায় শরিয়তের বিধিবিধানকে চন্দ্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাখা হয়েছে। এজন্য চান্দ্রবৎসরের হিসাব সংরক্ষণ করা ফরজে কেফায়া। সব উম্মত এটা ভুলে গেলে সবাই গুনাহগার হবে। হিজরি সনের উদ্ভব ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর খেলাফতকালে। ওই সময় খলিফার কাছে একটি চুক্তিপত্র আনা হয়। সেখানে শাবান মাসের কথা উল্লেখ ছিল। তখন ওমর (রা.) বললেন, এটা কি গত শাবান না আগামী শাবান? তিনি এ-সংক্রান্ত বিভ্রান্তি নিরসনে তারিখ গণনার নির্দেশ দিলেন এবং রসুল (সা.)-এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতকে কেন্দ্র করে হিজরি সন গণনার সূচনা করেন। এ সময় মহররমকে প্রথম মাস হিসেবে গণ্য করা হয়। মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গণনার মাস বারোটি, আসমানগুলো ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন থেকে। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। কাজেই এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার কোরো না।’ (সুরা তওবা, আয়াত ৩৬) এ আয়াতের চারটি সম্মানিত মাসকে চিহ্নিত করতে গিয়ে নবী করিম (সা.) বিদায় হজের সময় মিনা প্রান্তরে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘তিনটি মাস হলো জিলকদ, জিলহজ ও মহররম এবং অন্যটি হলো রজব।’ (তাফসির ইবনে কাসির) হিজরি সন অনেক কারণেই গুরুত্ব বহন করে। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘লোকেরা আপনাকে নবচন্দ্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, আপনি বলুন, তা হলো মানুষের এবং হজের জন্য সময় নির্ধারণকারী।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৯) এ আয়াত থেকে স্পষ্ট, আল্লাহ বান্দাদের হিসাব-নিকাশের সুবিধার্থে চন্দ্রকে সৃষ্টি করেছেন। এজন্য চান্দ্রমাস তথা হিজরি সনের গুরত্ব অপরিসীম। মহান আল্লাহ চান্দ্রমাস সম্পর্কে কোরআনে বলেন, ‘আমি রাত ও দিনকে করেছি দৃষ্টি নিদর্শন, রাতের নিদর্শনকে অপসারিত করেছি এবং দিনের নিদর্শনকে আলোকোজ্জ্বল করেছি যাতে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ সন্ধান করতে সক্ষম হও এবং রাতে তোমরা বর্ষ-সংখ্যাও হিসাব করতে পার এবং আমি সবকিছু বিশদভাবে বর্ণনা করছি।’ এ আয়াত থেকে উপলব্ধি করা যায় যে, আল্লাহতায়ালা অনুগ্রহ -স্বরূপ তাঁর বান্দাদের সাল গণনা ও অন্যান্য হিসাব-নিকাশের জন্য দিন-রাতকে সৃষ্টি করেছেন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর