অর্থ-সম্পদের মাধ্যমে মানুষ সব সময় সুখী হতে পারে না। তবে হ্যাঁ, অর্থ-সম্পদ সুখের একটি উপাদান মাত্র। বহু মানুষ অনেক অর্থ-সম্পদ থাকার পরও বেশি পাওয়ার স্বপ্ন ও উচ্চাভিলাষ তাদের দরিদ্র বানিয়েছে। আবার এমন গরিব মানুষ আছে, ভাগ্যে যা আছে তা পেয়ে পরিতুষ্ট। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সম্পদের আধিক্য প্রকৃত ধনাঢ্যতা নয়; বরং প্রকৃত ধনাঢ্যতা হলো অন্তরের ধনাঢ্যতা।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৪৬)
তাকদিরে বিশ্বাস মানুষকে অন্তরের দিক থেকে ধনী করে। আবু হুরায়রা (রা.)-কে উপদেশ দিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন, ‘তোমার ভাগ্যে আল্লাহ যা বণ্টন করে রেখেছেন, তাতে সন্তুষ্ট থাকবে, তাহলে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে ধনী হতে পারবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩০৫)
সুতরাং বান্দা অল্পে তুষ্ট থাকলে আল্লাহ তার হূদয় ধনী ও অভাবমুক্ত করে দেন। তবে খোদাভীরু লোকদের আর্থিকভাবে বেশি ধনী হওয়াতে কোনো অসুবিধা নেই। বরং ধনী হলে বহু ইবাদত পালন ও ইবাদতে সহযোগিতা করা যায়। আবদুল্লাহ বিন খুবায়ব তার চাচা (ইসমু মুবহাম বা নাম অজ্ঞাত) বলেন, আমরা এক মজলিসে বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় নবী (সা.) তাঁর মাথায় পানির চিহ্নসহ উপস্থিত হলেন। আমাদের কেউ তাকে বলল, আপনাকে আমরা আজ খুব প্রফুল্ল দেখছি। তিনি বলেন, হ্যাঁ, আলহামদু লিল্লাহ। অতঃপর মজলিসের লোকজন ধন-সম্পদের আলোচনায় লিপ্ত হল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তাকওয়ার অধিকারী (খোদাভীরু) লোকেদের ধন-সম্পদের মালিক হওয়াতে কোনো দোষ নেই। আর খোদাভীরু লোকদের জন্য ধন-সম্পদ থেকে সুস্থতা বেশি উত্তম। মনের প্রফুল্লতাও নিয়ামতরাজির অন্তর্ভুক্ত।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২১৪১)
মনের প্রসন্নতা কাজেকর্মে ও আচরণে ফুটে উঠে। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘প্রতিটি ভালো কাজ সদকারূপে গণ্য। তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে দেখা-সাক্ষাত্ করা এবং তোমার বালতির পানি দিয়ে তোমার ভাইয়ের পাত্র ভর্তি করে দেওয়াও ভালো কাজের অন্তুর্ভুক্ত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৭০)
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ