বিশ্বনবী (সা.)-এর পরম স্নেহের স্পর্শপ্রাপ্ত সাহাবি আমর ইবনে হুরাইস আল-মাখজুমি (রা.)। তাঁর নাম মূলত আমর। উপনাম আবু সাঈদ। তাঁর শ্রদ্ধেয় বাবার নাম ছিল হুরাইস।
সৌভাগ্যক্রমে তাঁরা বাবা-ছেলে দুজনই সাহাবি ছিলেন। তিনি মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ গোত্রের বনু মাখজুম শাখার সন্তান। সাঈদ ইবনে হুরাইস (রা.)-এর ছোট ভাই।
সাঈদ (রা.) মক্কা বিজয়ের ঘটনায় রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে অংশ নেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৫ বছর। রাসুল (সা.)-এর ইন্তেকালের সময় তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর। পরে ভাই আমর ইবনে হুরাইস (রা.)-এর সঙ্গে মক্কা থেকে কুফায় গিয়ে বসতি স্থাপন করেন। (আত-তাবাকাতুল কুবরা ৬/১০০; মুজামুস সাহাবা ৩/৭২)
আমর ইবনে হুরাইস (রা.) হিজরতের দুই বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন।
কথিত আছে, বদরের বছরে তাঁর মা তাঁকে নিয়ে রাসুল (সা.)-এর নিকট যান। রাসুল (সা.) তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে বেচাকেনা ও লেনদেনে বরকতের জন্য দোয়া করেন। সুবহানাল্লাহ। আল্লাহর প্রিয় বন্ধু বিশ্বনবী (সা.)-এর মোবারক হাত যার মাথায় লেগেছে আর বিশ্বনবী (সা.) যাঁর রিজিকের বরকতের জন্য দোয়া করেছেন, তার ওপর তো আল্লাহর বিশেষ রহমত থাকা আবশ্যকীয় বিষয়। ফলে তিনি একসময় কুফার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হয়ে ওঠেন।
‘তাহজিবুল কামাল’ গ্রন্থের বর্ণনায় পাওয়া যায়, তিনি আদি ইবনে হাতিমের কন্যাকে বিয়ে করেন। যার মহর আদি ইবনে হাতিম ধার্য করেন ১২ উকিয়া। কিন্তু আমর ইবনে হুরাইস তাঁর কাছে একটি থলি পাঠান, যাতে ছিল দশ হাজার দিরহাম। (তাহজিবুল কামাল ফি আসমা-ইর রিজাল : ২১/৫৮১)
রাসুল (সা.)-এর ইন্তেকালের সময় তাঁর বয়স ছিল ১২ বছর। জুরিকলি বর্ণনা করেছেন, তাঁর থেকে ১৮টি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি রাসুল (সা.), আবু বকর (রা.) ও ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন।
তিনি জিয়াদ ও তাঁর পুত্র উবাইদুল্লাহর পক্ষ থেকে কুফার গভর্নর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। সেখানেই স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেন। কুরাইশদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম কুফায় বসতি স্থাপনকারী ব্যক্তি।
খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ানের খেলাফতকালে ৮৫ হিজরি/৭০৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইন্তেকাল করেন।
(আত-তাবাকাতুল কুবরা ৬/১০০; আল-ইসাবাহ ৪/৫১০; উসদুল গাবাহ ৩/৭১০; সিয়ারু আলামিন নুবালা ৪/৪২৯; আল-ইস্তিআব ৩/১১৭২; আল-আলাম ৫/৭৬)