কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি-হাইকমিশনে গভীর ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে ‘গণহত্যা দিবস-২০১৮’ পালন করা হয়েছে।
রবিবার এই দিবসটি পালন উপলক্ষে ডেপুটি-হাইকমিশন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক নারকীয় হত্যাযজ্ঞের আলোকচিত্র প্রদর্শন করার পাশাপাশি হত্যাকান্ডের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ও বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের তথ্যচিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করে।
‘গণহত্যা দিবস-২০১৮’ উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন ডেপুটি-হাইকমিশনের কাউন্সেলর মিয়া মোঃ মাইনুল কবির এবং কাউন্সেলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) শেখ সফিউল ইমাম। এরপর ডেপুটি-হাইকমিশনার তৌফিক হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার মৈত্রী সম্মাননা পদক প্রাপক বিশিষ্ট সাংবাদিক দিলীপ চক্রবর্তী ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়।
তৌফিক হাসান বলেন ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে নিরীহ সাধারণ জনতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসনগুলোতে অবস্থানরত ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দ এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সৈনিক ও অন্যান্য স্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে বর্বর হত্যাকান্ড চালিয়েছিল ওই সময়, তা ছিল জঘন্যতম হত্যাকান্ড। এই হত্যাকান্ড আন্তর্জাতিকভাবে যথাযথভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য তিনি জাতিসংঘ সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন’।
দিলীপ চক্রবর্তী তাঁর বক্তব্যে বলেন ‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালি জনতার উপর হত্যাকান্ডের যে ধ্বংসস্তুপ দেখেছি, তাতে আমি নিশ্চিত ছিলাম যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। কারণ এতো বিসর্জনের পর কোন দেশ পরাধীন থাকতে পারে না। দিলীপ চক্রবর্তী আরও জানান ‘ত্রিশ লাখ জনগণের আত্মত্যাগ ও বহু নারীর সম্ভমের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে। যে ধর্মান্ধতার কারণে বাংলা ভাগ হয়েছিল, বাংলাদেশের স্বাধীনতা তা অনেকাংশে ঘুচিয়ে দিয়েছিল। অসাম্প্রদায়িক মানুষগুলোই বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনে এগিয়েছিল’।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় জানান ‘পাকিস্তানি জান্তা সরকার ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল না মেনে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর অপ্রত্যাশিতভাবে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে গুলিবর্ষণ চালায় যা বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হত্যাযজ্ঞ। এটি ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে পরিচিত। এই হত্যাকান্ড ছিল পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর পূর্ব পরিকল্পিত তিন মাসব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞের শুরু।
দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনেও এদিন যথাযথ মর্যাদায় ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করা হয়। হাইকমিশন থেকে দেওয়া এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয় এদিনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বক্তারা সকলেই ২৫ মার্চের সেই রাতে পাক বাহিনীর ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতিও এদিন শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বিডিপ্রতিদিন/ ই- জাহান