ভারতে ক্রিকেট যদি ধর্ম হয় তবে সেই ধর্মের গুরু হলেন শচীন টেন্ডুলকার। ভারতীয় হিবেবে কিংবদন্তী ক্রিকেটার সম্পর্কে যতই জানা যায় ততই তার ভক্ত হতে বাধ্য।
সম্প্রতি আরো একটি আশ্চর্যজনক কাজ করে বসলেন তিনি। নারী নাপিতের কাছে দাড়ি কামালেন ক্রিকেটের মাস্টার ব্লাস্টার শচীন টেন্ডুলকর। নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তার একটি ছবি দিয়ে তার অসংখ্য ভক্তদের বললেন এই জিনিসটা আমরা কখনই কল্পনা করতে পারি না।
বিশ্ব ক্রিকেটের প্রায় সমস্ত রেকর্ডের অধিকারী শচীন ছবিটি স্টপো করে ক্যাপশন দিয়েছেন, যার বাংলা অর্থ ‘আমার কাছে এটাই প্রথম। আপনারা হয়তো জানেন না কিন্তু আমি এর আগে কখনও এমন ব্যক্তির কাছে শেভ করিনি। সেই রেকর্ডটা আজ ভেঙে চুড়মার হয়ে গেছে। সেলুনে নারী নাপিতের সাথে সাক্ষাত হওয়াটা সত্যিই সম্মানের।’
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে একটি বিউটি পার্লারে বসে নেহা নামে এক নারীর কাছে নিজের দাড়ি কামাচ্ছেন শচীন। পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন আরেক নারী-যার নাম জ্যোতি। আর এই ছবিটির মধ্যে দিয়েই তিনি হয়তো বোঝাতে চাইছেন যে এমন কোনো কাজ নেই যা নারীরা করতে পারেন না।
শুক্রবার ছবিটি পোস্ট করার পরই শচীনকে শ্রদ্ধায় ভরিয়ে দিয়েছেন তার ভক্তরা।
নেহা ও জ্যোতি-সম্পর্কে দুই বোন। উত্তরপ্রদেশের বনওয়ারি টোলা গ্রামে তাদের বাসিন্দা। তাদের বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ায় ২০১৪ সালে এই সেলুনটির দায়িত্ব নেয় তারা। কিন্তু নারী হওয়ার কারণে অনেক পুরুষই সেখানে চুল বা দাড়ি কাটাতে দ্বিধাবোধ করতেন। ফলে একদিকে বাবার চিকিৎসা অন্যদিকে সংসার চালানো-এই দুইটি বিষয়কে মাথায় রেখে দুই জনেই পুরুষ পোশাক ও পুরুষ নাম রাখা শুরু করলেন। এরপরই শুরু হল নতুন পথ চলা। অল্পবয়সী দুই নারীর এই সংগ্রামকে সম্মান জানিয়ে এগিয়ে আসে জিলেট ইন্ডিয়া। তাদের সংগ্রামের কাহিনী নিয়ে একটি বিজ্ঞাপন চিত্রও প্রকাশ করে জিলেট ইন্ডিয়া। আর এরপরই নেতা-জ্যোতিকে অতি বড় নিন্দুকরাও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে।
একমাত্র ইউটিউবেই ভিডিওটি দেখা হয়েছে ১.৬ কোটির বেশিবার। আর ওই ভিডিও দেখার পরই তাদের কাছে দাড়ি কাটার সিদ্ধান্ত নেন শচীন। আর শচীনের পোস্ট করা ছবিটিতে লাইক পড়েছে ৭ লাখ।
নেহা ও জ্যোতির পড়াশোনার খরচ মেটানো ও তাদের জীবিকার যাবতীয় সরঞ্জাম কেনার জন্য জিলেট স্কলারশিপ তুলে দিলেন টেন্ডুলকার।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন