৩ আগস্ট, ২০১৯ ১৫:০৬

কলকাতার বেকার হোস্টেলে বসলো বঙ্গবন্ধুর নতুন আবক্ষ মূর্তি

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

কলকাতার বেকার হোস্টেলে বসলো বঙ্গবন্ধুর নতুন আবক্ষ মূর্তি

বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেহারার সাথে সাদৃশ্য না থাকায় বেকার হোস্টেলে বসানো হলো নতুন আবক্ষ মূর্তি। দীর্ঘ ৮ বছর পর কলকাতায় ৮ নম্বর স্মিথ লেনে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজরিত বেকার হোস্টেল থেকে বঙ্গবন্ধুর আগের আবক্ষ মূর্তি সরিয়ে নতুন মূর্তিটি প্রতিস্থাপন করা হলো। 

আগামী ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে  শনিবার সকালে বাংলাদেশের ভাস্কর লিটন পাল রনির হাতে নির্মীত মূর্তিটি  উন্মোচন করেন বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের স্থানীয়  সরকার প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, পশ্চিমবঙ্গের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী জাবেদ আহমেদ খান, উপস্থিত ছিলেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, হাইকমিশনের ফার্স্ট (প্রেস) সেক্রেটারি মহম্মদ মোফাকখারুল ইকবাল, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন(আইসি.সি.আর) আঞ্চলিক কর্মকর্তা গৌতম রায়। 

মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন  "আমি গত মার্চ মাসে বেকার হোস্টেল পরিদর্শন করতে এ আসি এবং বঙ্গবন্ধুর চেহারার সাথে এই মূর্তিটির অমিল দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম এবং তাকে জানিয়েছিলাম। এরপরে জাতির জনকের চেহারার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ মূর্তি প্রতিস্থাপন করার বিষয় ঠিক হয়। এ উপলক্ষে এই ভাস্কর্য নির্মাণ করে এখানে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এ কাজে  কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাই কমিশন  ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার সার্বিক ভাবে আমাদের  সহায়তা করেছে।"  

অনুষ্ঠানে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী জাবেদ খানকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের মন্ত্রী। তাজুল ইসলাম আরও জানান "এই বেকার হোস্টেল গোটা বাঙালি জাতির কাছে একটা স্মৃতিময় এবং এটা সংরক্ষণ করা হোক। আমরা আমাদের তরফ থেকে সবরকম সহযোগিতা করব ।" সেই সাথে দুই দেশের বিভিন্ন স্মৃতি বিজড়িত স্থান গুলি সংরক্ষণ করারও আশ্বাস দেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী জাবেদ আহমেদ খান বলেন  "শেখ মুজিবর রহমান কলকাতার বেকার হোস্টেলে ছিলেন এটাই গর্বের। আমরা এক সাথে, এক পায়ে চলতে চাই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশ নিয়ে যথেষ্ঠ উদ্যোগী।"

উল্লেখ্য কলকাতার নিউমার্কেটের কাছে এই বেকার হোস্টেলটি অবস্থিত। ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র হিসেবে ১৯৪৫-৪৬ সালে বঙ্গবন্ধু এই হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছিলেন। ইসলামিয়া কলেজের বর্তমান নাম এখন মৌলানা আজাদ কলেজ। 

২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি স্মৃতি কক্ষের সামনে বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষ মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেছিলেন। সেই অনুষ্ঠানেই বঙ্গবন্ধুর বিকৃত মূর্তি দেখে উপস্থিত সকলেই সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন। অনেকে বঙ্গবন্ধু অনুরাগী দ্রুত মূর্তিটি পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছিলেন। কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এক উপদেষ্টা মূর্তিটির পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন। তারপরই শুরু হয়েছিল তৎপরতা। 

বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে ১৯৯৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে বেকার হোস্টেলের ২৩ ও ২৪ নম্বর কক্ষ নিয়ে গড়া হয় বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষ। এ স্মৃতিকক্ষে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত খাট, চেয়ার, টেবিল ও আলমারি। ১৯৯৮ সালের ৩১ জুলাই বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন উচ্চশিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক সত্যসাধন চক্রবর্তী। 

 

বিডি প্রতিদিন/ তাফসীর আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর