২৭ জানুয়ারি, ২০২০ ২১:২১

কলকাতায়ও করোনাভাইরাস আতঙ্ক, পর্যবেক্ষণে চীনা নাগরিক!

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

কলকাতায়ও করোনাভাইরাস আতঙ্ক, পর্যবেক্ষণে চীনা নাগরিক!

এবার কলকাতাতেও ছড়াল চীনা ভাইরাস আতঙ্ক। নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে এই আশঙ্কায় কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক চীনা নাগরিক। 

জানা যায়, ৬ মাস আগে দেশ ভ্রমণে বের হয়েছিলেন ২৮ বছরের চীনা যুবতী জো হুয়ামিন। নামিবিয়া, মরিশাস, মাদাগাস্কার সহ কয়েকটি রাষ্ট্র ভ্রমণের পর ২৪ শে জানুয়ারি ভারতের কলকাতায় আসেন তিনি। কিন্তু ট্রেনে চেপে কলকাতায় আসার পথে ট্রেনের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই চীনা যুবতী। এই অবস্থায় কলকাতায় পৌঁছেই তিনি প্রথমে যান কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস এর ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। গত কয়েকদিন সেখানেই মাথা ব্যথা, হাল্কা জ্বর নিয়ে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কা থাকায় রবিবার রাতে সেখান থেকে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় কলকাতার সরকারি বেলেঘাটা ইনফেকশাস ডিজিজ (আইডি) হাসপাতালে। 

সোমবার বেলেঘাটা আইডি সূত্রে জানা গেছে, এই মুহূর্তে তাকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। করা হচ্ছে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তাকে রাখা হয়েছে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে। তবে চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারনা এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ এখনো পর্যন্ত তার শরীরে নেই। 

এদিকে চীনা নাগরিকের ভর্তির খবর পেয়ে এদিন সকালে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে আসেন পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য। তার সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরে অন্যান্য কর্মকর্তারাও। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে সুপার আশীষ মান্নার সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকও করেন তারা। এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সম্পর্কিত পরিকাঠামো ঠিকঠাক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হয়। এরপর দুপুরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সাথেও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে এই ভাইরাসের মোকাবিলা নিয়ে আলোচনা হয়। রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা জানান আপাতত ওই চিনা যুবতীর শারিরীক অবস্থা স্তিতিশীল। তবে হাসপাতাল থেকে এখনই তাকে ছুটি দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে এখনও কোন চূড়ান্ত সিন্ধান্ত নেওয়া হয়নি। 

এদিকে চিনের পর মারাত্মক এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশি নেপালেও। ফলে ভারত-নেপাল সীমান্তের তিনটি পয়েন্টে মেডিকেল টিম মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। 

নেপাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশের সময়ই দার্জিলিং জেলার তিনটি পয়েন্ট-পশুপতি ফটক, পানিট্যাঙ্কি ও গলগলিয়া-এ পর্যটকদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। এরমধ্যে সবচেয়ে ব্যস্ততম পয়েন্ট পাটিট্যাঙ্কি।  

দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রলয় আচার্য জানান ‘গত রবিবার থেকেই দার্জিলিং-নেপাল সীমান্তের তিনটি পয়েন্টে আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করা শুরু করে দিয়েছে।’ 

ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে আসা রোগীদের রাখার জন্য উত্তর বঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। 

এদিকে নোভেল কোরোনা ভাইরাসে আতঙ্কে চিনে আটকে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের দুই তরুণ গবেষক। একজন বীরভূমের বাসিন্দা, অন্যজন বর্ধমানের বাসিন্দা। ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর