‘নারদা’ ঘুষ কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেফতার পশ্চিমবঙ্গের দুই মন্ত্রীসহ চার হেভিওয়েট নেতাকে জেল হেফাজতের বদলে ‘গৃহবন্দি’ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ফলে জেলমুক্তি ঘটলেও গৃহবন্দি অবস্থায় থাকতে হবে পরিবহন ও আবাসন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি, তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতার সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। যদিও করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনিক কাজে যুক্ত ফিরহাদ হাকিমসহ অন্য মন্ত্রীরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাদের কাজ চালাতে পারবেন।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। কিন্তু শুনানি চলাকালীন সময়ে এই বেঞ্চের মধ্যে মত পার্থক্য হয়। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দোপাধ্যায় গ্রেফতারকৃত চার হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীকে জামিন দেওয়ার পক্ষে থাকলেও তার বিরোধিতা করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল। এরপরই দেশটির শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক গৌতম নাভলাখা মামলার উদাহরণ টেনে ওই চারজনকে গৃহবন্দি করার নির্দেশ দেয় আদালত। সেক্ষেত্রে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেই তাদের সমস্ত কাজ, মিটিং, সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সারতে হবে। অনলাইনে কার সাথে কথা, কী কথা সমস্ত রেকর্ড রাখতে হবে। বাড়িতে সিসিটিভি না থাকলে তা বসাতে হবে। গৃহবন্দি অবস্থায় বাড়িতে কে কে আসছেন তারও খবর রাখতে হবে।
সেই সাথে দুই বিচারপতির মতভেদ হওয়ায় এই মামলা বৃহত্তর বেঞ্চে যাচ্ছে। সেখানেই ওই চার নেতা-মন্ত্রীর জামিন পাওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত হবে। তবে কবে ওই বেঞ্চের শুনানি শুরু হবে তা এখনও স্থির হয়নি। ফলে যতদিন না পর্যন্ত বৃহত্তর বেঞ্চে এই মামলার রায় না হয়, ততদিন গৃহবন্দি অবস্থাতেই থাকতে হবে চার নেতা-মন্ত্রীকে।
যদিও অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী অভিষেক সিংভি বলেন ‘গৃহবন্দিও কোন মতেই গ্রেফতারের চেয়ে কম নয়। তাদেরকে এখনি মুক্তি দেওয়া উচিত।’
তার যুক্তি ‘তার মক্কেলরা মন্ত্রী, বিধায়ক.. তাদের কোথাও পালিয়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তদন্তে সহযোগিতা করেনি এমন অভিযোগও নেই। তাহলে কেন গ্রেফতার করা হয়েছে?
বিডি প্রতিদিন/হিমেল