ভারতের পরবর্তী লোকসভার নির্বাচন ২০২৪ সালে, অর্থাৎ মাঝে বাকি আরও ৩ বছর। কিন্তু এরই মধ্যে যেন লোকসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান ও রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে ব্যাপক সফলতার পর মমতা ব্যানার্জির লক্ষ্য ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। সেই দিকে তাকিয়েই বিজেপিবিরোধী জোট গঠনের লক্ষ্যে দিল্লি সফরও করেছেন মমতা। গত সোমবার থেকে দিল্লি সফরে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও দলের সাংসদ রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা, অভিষেক মনু সিংভি ও কমল নাথ, আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝিসহ একাধিক নেতা-নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা। আবার অভিনেত্রী শাবানা আজমি, তার স্বামী কবি জাভেদ আখতারের মতো অ-রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গেও সময় কাটিয়েছেন মমতা। তারই ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহনমন্ত্রী নীতিন গড়করির সঙ্গেও একান্তে বৈঠক করেন তিনি। বাকি ছিল এনসিপি প্রধান ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শারদ পাওয়ার, মুখোমুখি সাক্ষাৎ না হলেও শুক্রবার ফোনেই তার সঙ্গে আলোচনা সারলেন মমতা।
পাঁচদিনের সেই সফর শেষে শুক্রবার দিল্লি ছাড়ার আগে গণমাধ্যমের সামনে মমতা নিজেই জানান ‘সফর সফল হয়েছে। রাজনৈতিক ও রাজ্যের উন্নয়ন-সব ক্ষেত্রেই আলোচনার জন্য এসেছিলাম, তা ফলপ্রসু হয়েছে।’
তবে মমতা পাখির চোখ যে দিল্লি, সে কথাও আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন মমতা। বিজেপির ওপর চাপ বাড়াতে তার বার্তা ‘নিজের কাজ করে দুই মাস অন্তর একবার করে দিল্লি আসব।’
সাংসদ না হলেও তৃণমূলের সর্বসম্মতিতে সম্প্রতি দলের সংসদীয় দলের চেয়ারপারসন করা হয়েছে মমতাকে, সেক্ষেত্রে সংসদে আসতে আর কোনো বাধাই নেই তার। রাজনৈতিক মহলের অভিমত এই সুযোগে ২০২৪-এর আগে ঘনঘন দিল্লি এসে অ-বিজেপি দলগুলোর সঙ্গে প্রতিনিয়ত বৈঠক করে বিরোধী জোটকে আরও শক্তিশালী করার কাজটা সহজ হতে পারে।
এ ব্যাপারে মমতা এদিন জানান, ‘বিরোধী দলগুলো যদি একজোট হয়, তবে এর থেকে ভালো আর কিছু হতে পারে না। সবার সঙ্গে হয়তো আমার দেখা হয়নি, কিন্তু অনেকের সঙ্গেই আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। আমার মনে হয় সফর সফল হয়েছে। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
২০২৪ সালে তার লক্ষ্য কি? এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে মমতা বলেন, সকলেরই লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশকে বাঁচানো। তিনি জানান ‘দেশে গণতন্ত্র থাকবে-এই বিশ্বাস নিয়ে আমাদের চলতে হবে। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে সকলকে মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কাজ করার জন্য দেশ সব থেকে বড় জায়গা। কিন্তু গণতন্ত্র বিপদে পড়লে দেশও বিপদে পড়বে। তাই ‘গণতন্ত্র বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’- এটাই আমাদের স্লোগান। পাশাপাশি কৃষক, শ্রমিক, বেকারসহ সকল শ্রেণির মানুষের জন্য কাজ করা উচিত। আমরা কৃষকদের পাশে আছি, থাকব। আমার মনে হয়, দেশের উন্নতি প্রয়োজন, আমরা আমাদের দেশবাসীর উন্নয়ন চাই। বর্তমানে পেট্রোল, রান্নার গ্যাসের দাম হু হু করে বেড়ে চলেছে। তবে আমি ঠিক করেছি আমার নিজের কাজ সেরে দুই মাস অন্তর একবার করে আসব।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ