সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইভ টিজিংয়ে বাধা

ছাত্রীর ভাইকে পিটিয়ে হত্যা

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ইভ টিজিংয়ে বাধা দেওয়ায় ছাত্রীর ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। দুই দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। নিহত যুবকের নাম মিন্টু মিয়া (২৫)। তিনি জেলার সোনারগাঁ উপজেলার সাদীপুর গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে। এ বিষয়ে নিহতের পরিবার বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে গতকাল বিকালে       নিহতের স্বজনরা একত্র হয়ে আসামিদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনার পর আসামিরা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ইভ টিজিংয়ের শিকার ওই ছাত্রী সোনারগাঁ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে পড়েন। আসা-যাওয়ার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করত সোনারগাঁ পৌরসভার রফিক মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন ও তার সহযোগীরা। বুধবার সকালে ওই ছাত্রী কলেজে যাওয়ার পথে জাকির তার পথ রোধ করে কুপ্রস্তাব দেয়। বিষয়টি ওই ছাত্রী তার বাবা মোতাহার হোসেন ও মামাতো ভাই মিন্টু মিয়াকে জানান। পরে জাকিরকে ডেকে মিন্টু তার বোনকে উত্ত্যক্ত করতে নিষেধ করেন। শুক্রবার সকালে মিন্টু মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ওতপেতে থাকা জাকির ও তার সহযোগীরা পথ রোধ করে রিকশা থেকে মিন্টুকে নামিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে অবস্থার অবনতি হলে মিন্টুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল তিনি মারা যান। মিন্টুর মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে তার স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে অভিযুক্ত জাকির ও তার আত্মীয় রাসেল, মামা মহসিন আলী ও খালা রেখা আক্তারের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালান এবং অগ্নিসংযোগ করেন। খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের বাবা সুরুজ মিয়া বলেন, ‘ফুফাতো বোনকে ইভ টিজিংয়ে বাধা দেওয়ায় আমার ছেলেকে সন্ত্রাসী জাকির হোসেন, হিমেল মিয়া, পারভেজ মিয়া, আলো মিয়া, কালু মিয়া ওরফে হৃদয়, স্বপন মিয়া, হীরা মিয়া ও শরিফ মিয়া পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাকির হোসেন ও হিমেল মিয়ার মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলম জানান, মিন্টু মিয়াকে হত্যার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে নিহতের পরিবার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিহতের উত্তেজিত স্বজনরা জাকির ও তার স্বজনদের বাড়িতে হামলার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর