মঙ্গলবার, ১৫ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

তরুণ লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরে বোমা মেরে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তরুণ লীগ নেতা শেখ মনিরুল ইসলামকে (৩৮) হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের পালবাড়ী ভাস্কর্যের মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সন্ত্রাসীদের বোমায় গুরুতর আহত হন সন্তোষ ঘোষ নামে একজন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহত মনিরুল ইসলাম শহরের পুলিশ লাইন টালিখোলার ফজলুর রহমানের ছেলে। সম্প্রতি তারা এখানকার জমিজমা বিক্রি করে সদর উপজেলার পাগলাদহে বসবাস শুরু করেন। আহত সন্তোষ ঘোষ শহরের পুরাতন কসবা ঘোষপাড়ার নারায়ণ ঘোষের ছেলে। এলাকাবাসী জানান, রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মনিরুল ও সন্তোষ পালবাড়ী মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় ৭-৮ জন সন্ত্রাসী তাদের লক্ষ্য করে ছয়টি বোমা নিক্ষেপ করে। বোমার আঘাতে মনিরুলের মাথাসহ শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। পরে সন্ত্রাসীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা মনিরুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।  সন্তোষও বোমার আঘাতে গুরুতর আহত হন। সন্ত্রাসীরা চলে গেলে উপস্থিত লোকজন দুজনকেই যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কল্লোল কুমার সাহা বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই মনিরুলের মৃত্যু হয়। তার শরীরে বোমার স্প্লিন্টার ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর সন্তোষের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

স্থানীয়রা বলছেন, চাঁদাবাজি ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের কারণে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি মনিরুলের ভাই শাহরিয়ার ওই এলাকায় জমি কেনেন। এই বাবদ স্থানীয় সন্ত্রাসীরা তার কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় দেড় মাস আগে তারা শাহরিয়ারের ওপরও হামলা করেছিল। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক মাহমুদ হাসান বলেন, নিহত মনিরুল জেলা তরুণ লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন। বড় বড় মিছিল নিয়ে তিনি দলের সব কর্মসূচিতে যোগ দিতেন। আহত সন্তোষ যুবলীগ কর্মী।

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি (অপারেশন) শামসুদ্দোহা বলেন, কারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সে ব্যাপারে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। খুনিদের ধরতে ঘটনার পর থেকেই অভিযান শুরু হয়েছে। জানা গেছে, যশোর জেলা আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরেই দুই ভাগে বিভক্ত। একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার। আর অপর অংশটি নিয়ন্ত্রণ করেন যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ।

দলীয় সূত্র জানায়, নিহত মনিরুল ও আহত সন্তোষ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের অনুসারী ছিলেন।  এদিকে নিহত মনিরুল ইসলামের লাশ নিয়ে গতকাল দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলের নেতা-কর্মীরা। জেনারেল হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। পরে নিহতের লাশ নিয়ে যাওয়া হয় বাড়িতে।

সর্বশেষ খবর