সোমবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ওএমএসের চাল আটা কালোবাজারে ২১৫ টন জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে পাচার হওয়া ওএমএসের ২১৫ টন চাল ও আটা জব্দ করেছে র‌্যাব। গত শনিবার রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত রাজধানীর কাকরাইল, কারওয়ান বাজার এবং মোহাম্মদপুরের ১১টি আড়তে অভিযান চালিয়ে এসব খাদ্যপণ্য জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গুদামের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অন্তত ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র‌্যাব। জানা গেছে, সরকারি মাল কালোবাজারির ঘটনাটির তদন্ত করবে দুদক। অভিযান পরিচালনাকারী র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম জানান, জব্দ করা চাল ও আটা ঢাকার ১৪১টি ট্রাকে করে স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু তা না করে অসাধু চক্রের উদ্দেশ্য ছিল এসব পণ্য পাচার করে কালোবাজারে বিক্রি করা। আর এ জন্যই মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের গুদামে রাখা হয়েছিল সরকারি পণ্য। তিনি আরও বলেন, ওএমএসের পণ্য পাচারের ঘটনাটি দুদক তদন্ত করবে। জানা গেছে, চক্রের সদস্যরা আটটি ট্রাকে করে পাচার করা ২১৫ টন চাল ও আটা তেজগাঁওয়ের কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদাম থেকে গত শনিবার রাতে আটটি ট্রাকে করে রাজধানীর ডেমরা, এসব খাদ্যপণ্য চুয়াডাঙ্গা, শ্রীমঙ্গল ও মাওনায় পাচার করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ এর দুটি দল কাকরাইল, কারওয়ান বাজার এলাকায় ধাওয়া করে ট্রাকগুলো জব্দ করে কেন্দ্রীয় গুদামে নিয়ে যায়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সন্দেহ— তল্লাশি এড়াতে ট্রাকগুলোর উপরের ত্রিপলে ‘জরুরি পুলিশের খাদ্য সরবরাহের কাজে নিয়োজিত’ ‘জরুরি খাদ্য সরবরাহ’ লেখা ছিল। আর গুদামের রেজিস্ট্রি খাতায় একেকটি ট্রাক পুলিশের আইজিপি, বিশেষ শাখার প্রধান, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের নামে ইস্যু করা ছিল। অভিযোগ অনুযায়ী, ওএমএসের খাদ্যদ্রব্য পাচার সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্যের মধ্যে ব্যবস্থাপক হুমায়ূন কবীর, উপপরিদর্শক মনিয়ার হোসেনসহ গুদামের অন্তত ২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। আটটি ট্রাকের ১১৫ টন খাদ্যপণ্যসহ মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রীত আরও ১০০ টন চাল ও আটা জব্দ করে র‌্যাব। তবে ১১টি আড়তের কোনো মালিককেই তারা আটক করতে পারেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত ওএমএসের চাল সরকার কেনে ৩৯টা কেজিতে। বিক্রি করে ২৮ টাকা দরে। ৩২ টাকা কেজি দরে আটা কিনে ১৬ টাকায় বিক্রি করা হয়। স্বল্প আয়ের মানুষ তুলনামূলক কম দামে এসব খাদ্যপণ্য কিনে পরিবার নিয়ে বেঁচে আছে। কিন্তু ঘৃণ্য চক্র তাদের সেই খাদ্যপণ্য কালোবাজারে বিক্রি করে নিজেরা লাভবান হওয়ার পাঁয়তারা করেছিল। ঢাকায় প্রতিদিন ১৪০ টন খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করার কথা থাকলেও কালোবাজারি এই সিন্ডিকেট মাত্র ২০ টন বিক্রি করে বাকি ১২০ টন কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়।

সর্বশেষ খবর