টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারেও ২০ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার গোলচত্বর থেকে সরাইল উপজেলার বিশ্বরোড (কুট্টাপাড়া মোড়) হয়ে শাহবাজপুর এলাকা পর্যন্ত এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে মহাসড়কে কয়েক হাজার যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে পড়ে আছে। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, মহাসড়কের এসব এলাকায় গর্ত ছিল। গত তিন মাসে একাধিকবার এসব গর্তে ইটবালু দিয়ে সংস্কার করা হলেও তা টেকেনি। টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে গর্তগুলো এখন বড় আকার ধারণ করেছে। মূলত এসব গর্তের কারণে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা প্রশাসন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ছয় বছর ধরে আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চারলেনে উন্নীতকরণ কাজ চলছে। এক পাশের কাজ শেষ হলেও সম্পূর্ণরূপে চালু হয়নি। ফলে সরু এক পাশ দিয়েই দীর্ঘদিন ধরে যানবাহন চলাচল করছে। ভারতীয় ঋণে ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারতের এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেশ ছেড়ে চলে যান। প্রায় তিন মাস পর তারা ফিরে এলেও কাজের গতি আর আগের মতো হয়নি। জানা যায়, সরাইলের বিশ্বরোড গোলচত্বর থেকে আশুগঞ্জ গোলচত্বর পর্যন্ত সাড়ে ১০ কিলোমিটার সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়েপড়েছে। এসব স্থানে ধীরগতিতে চলছে পণ্যবাহী গাড়ি। মহাসড়কের বড় বড় গর্তে আটকা পড়ছে পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ দূরপাল্লার অনেক যানবাহন। এসব জায়গায় যান চলাচলের গতি নামিয়ে আনতে হচ্ছে ঘণ্টায় ১ থেকে ৫ কিলোমিটারে। চালক ও যাত্রীরা জানান, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে সড়কের বিভিন্ন অংশে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। এতে বিভিন্ন যানবাহন আটকে যাচ্ছে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তীব্র যানজটের সৃষ্ট হচ্ছে। বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগছে। এ ছাড়া গাড়িরও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। বাসযাত্রী লোকমান মিয়া বলেন, আমরা কয়েকজন শ্রমিক সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকার পথে যাচ্ছিলাম। ঢাকার একটি কারখানায় আমরা শ্রমিকের কাজ করি। তবে যানজটের কারণে সঠিক সময়ে কাজে যোগ দিতে পারব না। সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রহমান বলেন, আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইলের বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত মহাসড়কের অসংখ্য স্থানে তিন ফুটের বেশি গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে গাড়ি এসে ৭০ কিলোমিটার গতি থেকে কমিয়ে ৫ কিলোমিটারে নামতে বাধ্য হচ্ছে। একটি ট্রাককে এসব স্থান অতিক্রম করতে লাগছে ২০ মিনিট পর্যন্ত। ফলে যানজট অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।