মাদারীপুরের শিবচরে এক স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ শেষে হত্যার অভিযোগে শিবচর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। মামলায় হোটেল কর্মচারীসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। রবিবার রাতে শিবচরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে ইন্নি আক্তার নামে এক স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে হোটেল কর্মচারী রোনাল্ড, খায়রুল এবং রুবেল খানকে আটক করেছে পুলিশ। গণধর্ষণে নিহত কিশোরী পৌর এলাকার শেখ ফজিলাতুন নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। এ ঘটনায় মাদারীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গতকাল দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার জানান, রবিবার স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে উৎসব একাত্তর হোটেলে কক্ষ ভাড়া নেয় রুবেল খান। এ সময় বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হয় রুবেল। একপর্যায়ে রক্তাক্ত অবস্থায় কিশোরীকে ফেলে পালিয়ে যায় রুবেল। পরে পুলিশ হোটেল কক্ষ থেকে যৌন উত্তেজক ওষুধ ও নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসাবাদে আটক রোনাল্ড এবং খাইরুল জানান, এ হোটেলে দেহ ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজ চলত। হোটেলের মালিক শিবচর পৌর মেয়র আওলাদ খান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। রুবেল জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, কয়েক মাস আগে কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয় তার। সম্পর্কের জের ধরেই স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে কক্ষ ভাড়া নেয়। পরে রুবেল কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। এ সময় কিশোরী রক্তাক্ত হয়ে অসুস্থ হলে তাকে ফেলে পালিয়ে যায় রুবেল। নিহতের স্বজনদের দাবি, এরপরে হোটেলের কর্মচারীরা কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে হত্যা করে। নিহত স্কুলছাত্রীর মা ডলি বেগম বলেন, আমার মেয়েকে হোটেলে খাওয়ার কথা বলে ফুসলিয়ে নিয়ে তিনজনে গণধর্ষণ শেষে হত্যা করেছে। একটি প্রভাবশালী মহল বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি এর বিচার চাই। উল্লেখ্য, উৎসব একাত্তর হোটেলে কক্ষ ভাড়া নিয়ে ইন্নি আক্তার নামে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে রুবেল। পরে হোটেলের ম্যানেজার রোনাল্ড এবং হোটেল বয় খাইরুলও কিশোরীকে ধর্ষণ করে। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি : এদিকে নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর কাঁকড়া গ্রামে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার আসামি বাহার উদ্দিন (৩৫) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গতকাল দুপুরে তাকে ২নং আমলি আদালতে সোপর্দ করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসফিকুল হক আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বাহার উদ্দিন একই এলাকার আজিজুল হকের ছেলে। সে পাঁচ মেয়ের বাবা। পুলিশ জানায়, শনিবার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডে নাজমুন নাহার ঝুমুরকে (১২) ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ওইদিন বিকালে বাড়ির পাশের খালপাড় থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবার দায়ের করা মামলায় রবিবার রাতে একই এলাকার আজিজুল হকের ছেলে বাহার উদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশু : রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চা দোকানদার হাছান মিয়াকে (৫০) আটক করা হয়েছে। রবিবার দুপুর ২টার দিকে হাছানের বাসায় ঘটনাটি ঘটে। শিশুটিকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। ঢামেক সূত্র জানায়, শিশুটি বাবা-মায়ের সঙ্গে মোহাম্মদপুরের থাকে। তার বাবা রিকশাচালক। আর শিশুটির মা স্কুলে আয়ার কাজ করে। রবিবার দুপুরে শিশুটি হাছানের বাসার পাশে খেলছিল। হাছান শিশুটিকে কৌশলে তার ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এসময় শিশুটির চিৎকারে এক প্রতিবেশী ঘটনাটি দেখে হাছানকে ধরে ফেলেন। পরে শিশুটির বাবা-মা বাসায় এলে থানায় অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাছান মিয়াকে আটক করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।