বৃহস্পতিবার, ৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

পরীক্ষা বাড়ায় শনাক্ত বাড়ল

২৪ ঘণ্টায় ৩৩ মৃত্যু, আক্রান্ত ২৬৫৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরীক্ষা বাড়ায় শনাক্ত বাড়ল

ঈদের ছুটিতে নমুনা পরীক্ষা কমিয়ে দেওয়ায় কমে গিয়েছিল দৈনিক করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা। ছুটির পর পরীক্ষা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শনাক্তের সংখ্যা ফের বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ১৬০টি নমুনা পরীক্ষায় দুই হাজার ৬৫৪ জনের শরীরে মিলেছে করোনাভাইরাস। এ সময়ে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৩ জনের। ঈদের ছুটির মধ্যে ৩১ জুলাই থেকে ১ আগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত আট হাজার ৮০২টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয় দুই হাজার ১৯৯ জনের। পরদিন নমুনা পরীক্ষা কমে দাঁড়ায় তিন হাজার ৬৮৪টি। করোনা শনাক্ত হয় ৮৮৬ জনের। ছুটির শেষ দিনে চার হাজার ২৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয় এক হাজার ৩৫৬ জনের। শনাক্তের হার ছিল ৩২ শতাংশ। ছুটি শেষে প্রথম দিন নমুনা পরীক্ষা কিছু বাড়িয়ে সাত হাজার ৭১২টি করা হলে রোগী শনাক্তও বেড়ে হয় এক হাজার ৯১৮ জন। এর পরের ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ১৬০টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে রোগী শনাক্ত হয় দুই হাজার ৬৫৪ জন, যা গতকালের বুলেটিনে জানানো হয়। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত দেশে ১২ লাখ ১২ হাজার ৪১৬টি নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস সংক্রমিত  রোগী শনাক্ত হয়েছে দুই লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৪ জন। আর মোট মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ২৬৭ জনের। এক দিনে ৩৩ জনের মৃত্যু ও দুই হাজার ৬৫৪ জনের করোনা শনাক্ত ছাড়াও এক হাজার ৮৯০ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪১ হাজার ৭৫০ জন। এদিকে করোনা শনাক্ত রোগীর মৃত্যু ছাড়াও উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন অনেক মানুষ। মৃত্যুর পর নমুনা পরীক্ষায় কারও কারও শরীরে ভাইরাসটির সন্ধান মিলছে। কারও আবার নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব না হওয়ায় তারা হিসাবের বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। গতকালের বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ, আর এ পর্যন্ত গড় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ এবং আটজন নারী।

৩১ জন হাসপাতালে এবং দুজন বাড়িতে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে দুজনের বয়স ছিল ৯০ বছরের বেশি, একজনের বয়স ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে, ছয়জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১০ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, আট জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, চারজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, দুজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল। এর মধ্যে ১৮ জন ঢাকা বিভাগের, নয়জন চট্টগ্রাম বিভাগের, একজন রাজশাহী বিভাগের, একজন খুলনা বিভাগের, একজন বরিশাল বিভাগের এবং তিনজন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে গত ৮ মার্চ। প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় বুলেটিনে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো আরও তথ্য- গাজীপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গাজীপুরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হলো চার হাজার ২৭৯ জনের। এ পর্যন্ত জেলায় সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৮৭৯ জন। মারা গেছেন ৫৫ জন। দিনাজপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আমজাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ নিয়ে জেলায় মারা গেলেন ৩৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় ১৭৯ জনের নমুনার ফলাফলে ৭৭ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪৩ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৮৬৪ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ২৯৬ জন। ময়মনসিংহ : জেলা প্রশাসক ও জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. মিজানুর রহমানের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা শনাক্ত হলো দুই হাজার ৭৬৪ জনের। বগুড়া : এ জেলায় নতুন করে ৪০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট চার হাজার ৯৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হলো। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছে তিন হাজার ৬৪৯ জন। মোট মারা গেছেন ১০৯ জন। কুমিল্লা : গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৫৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৬৯ জনের। মোট মারা গেছেন ১৪৯ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ২১৫ জন। রাজশাহী বিভাগ : এক দিনে ১০৪ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ৩৪১ জন। শনাক্ত হওয়া ১০৪ জনের মধ্যে ১৩ জন রাজশাহীর, তিনজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের, একজন নওগাঁর, ১৮ জন জয়পুরহাটের, ৪০ জন বগুড়ার এবং ২৯ জন সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা। বিভাগের রাজশাহী জেলায় করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। বিভাগে এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা এখন ১৮৪ জন। এর মধ্যে বগুড়ায় ১০৯ জন, রাজশাহীতে ২৮ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আটজন, নওগাঁয় ১৪ জন, নাটোরে একজন, জয়পুরহাটে চারজন, সিরাজগঞ্জে ১১ জন এবং পাবনায় নয়জন মারা গেছেন। পুরো বিভাগে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৪৬০ জন। বাগেরহাট : জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় দুজনের করোনা শনাক্ত হওয়ায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬৩৮ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে আইনজীবী, চিকিৎসকসহ ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫১০ জন।

সর্বশেষ খবর