শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

রাজশাহীতে গাছে গাছে পাখপাখালি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে গাছে গাছে পাখপাখালি

চোখের সামনে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ছে শামুকখোল। পাখির কিচিরমিচির ডাকে মুখর হয়ে উঠেছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চারদিক। ভোরে পূর্ব-দিগন্তে সূর্য উঁকি দিতেই পাখির কিচিরমিচির ডাকে ঘুম ভাঙছে রোগী ও স্বজনদের। আবার দিন শেষে সন্ধ্যা নামছে পাখিদের নীড়ে ফেরার কলতানে। এমন চোখ জুড়ানো ছবি দেখে মন ভরে যাচ্ছে হাসপাতালে আসা মানুষদের। রামেক হাসপাতাল চত্বর এখন যেন পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের চত্বরজুড়ে পাখির মেলা। হাসপাতালের ভিতরের গাছপালার চূড়ায় আশ্রয় নিয়েছে পাখিরা। এদের অধিকাংশই শামুকখোল, পানকৌড়ি ও নিশিবক প্রজাতির। রাত-দিন তাদের কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হাসপাতাল চত্বর। পাখি-প্রকৃতি আর মানুষের কোলাহল যেন এখানে মিলেমিশে একাকার। তবে কেবল রামেক হাসপাতালই নয়, এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস, ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালাইড সায়েন্সেস ও কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায়ও পাখিরা বাসা বেঁধেছে।

পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাখিগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় প্রজনন করে আসছে। কিন্তু কারা-প্রাচীর নির্মাণের জন্য কয়েকটি বড় বড় গাছ কেটে ফেলায় এ বছর অনেক পাখি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। এখন এসব পাখির প্রজননের সময়। তাই তারা দলবদ্ধভাবে এসব এলাকায় বাসা তৈরি করছে।

বাংলাদেশ বায়োডাইভার্সিটি কনজারভেশন ফেডারেশনের সভাপতি ও পাখি বিশেষজ্ঞ এস এম ইকবাল বলেন, ১৫ থেকে ২০ বছর আগেও রাজশাহী অঞ্চলে খুব বেশিসংখ্যক শামুকখোল চোখে পড়ত না। কিন্তু এখন অনেক পাখি এই এলাকায় দলবদ্ধভাবে বাস করছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি ও পর্যাপ্ত খাবারের উৎস থাকায় গত সাত থেকে আট বছর ধরে শামুকখোল পাখি এদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেছে। আগে শুধু জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে এরা পাশের দেশ থেকে বাংলাদেশে প্রজনন করতে আসত। এখন এরা দেশের আবাসিক পাখি। রাজশাহীর ‘সেভ দ্য নেচার অ্যান্ড লাইফ’র প্রতিষ্ঠাতা মিজানুর রহমান বলেন, শামুকখোল পাখিগুলো সাত থেকে আট বছর ধরেই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় প্রজনন করে আসছে। কিন্তু সেখানে কিছু গাছ কেটে ফেলায় এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর এলাকায় পাখিরা প্রজনন করছে। তবে এ বছর এখানে পাখির সংখ্যা বেশি।

সর্বশেষ খবর