শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

পাঁচ উপনির্বাচনে প্রস্তুত ইসি

ঢাকা-নওগাঁয় ইভিএমে, পাবনায় ব্যালটে, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জে ডিসেম্বরে পাবনা-৪ এ ২৬ সেপ্টেম্বর

গোলাম রাব্বানী

পাঁচ উপনির্বাচনে প্রস্তুত ইসি

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ উপনির্বাচন শেষ করার টার্গেট নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে কমিশন। ভোটগ্রহণের জন্য প্রস্তুত রাখা হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। ইতিমধ্যে পাবনা-৪, ঢাকা-৫ ও ও নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে কমিশন। ঢাকা-১৮ ও সিরারগঞ্জ-১ আসনের নির্বাচনের তফসিল আগামী নভেম্বরের শুরুতে দেওয়ার কথা রয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এই দুই আসনে ভোট করবে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর পাবনা-৪ আসনে ভোট হবে ব্যালট পেপারে। তবে সব উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে। উপনির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পাবনা-৪ আসনে ভোট হবে ২৬ সেপ্টেম্বর। ঢাকা-৫ ও ও নওগাঁ-৬ আসনে ভোট ১৭ অক্টোবর। ঢাকায় করোনা আক্রান্ত বেশি এজন্য ঢাকা-১৮ আসনের নির্বাচন প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে করতে চাই না। দেখি পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে কি না। কমিশন পর্যবেক্ষণে করে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পরে যখন বাড়ানোর সুযোগ থাকে না, তখন ভোট করতেই হয়। সিরাজগঞ্জ-১ আসনে বন্যা পরিস্থিতি আছে। বন্যার সময় নির্বাচন করা কঠিন। যে এলাকায় নির্বাচন ওটা নদীভাঙন এলাকা। বন্যার  পরিস্থিতি উন্নতি হলে, কমিশন নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেবে। 

ডিসেম্বরে ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনে ভোট : ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে ৯ জুলাই ঢাকা-১৮ আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের ৪ দফায় বলা হয়েছে- সংসদের কোনো সদস্যপদ শূন্য হলে তার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তবে নির্বাচন কমিশনারের মতে কোনো দৈব-দুর্বিপাকের কারণে এ নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে  নির্বাচন সম্ভব না হলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ভোট করতে হবে। করোনাভাইরাস মহামারীতে বিশেষ পরিস্থিতির কারণে ইতিমধ্যে পাবনা-৪, ঢাকা-৫ পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে করছে ইসি। একইভাবে গত ৩১ আগস্ট ঢাকা-১৮ ও গত ২৭ জুলাই সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচন ‘পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে’ করার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ইসি। এ ক্ষেত্রে সিরাজগঞ্জ-১ আসনে ৯ ডিসেম্বর এবং আগামী বছরের ১৪ জানুয়ারির মধ্যে ঢাকা-১৮ আসনে নির্বাচন করতে হবে ইসিকে। তবে ইসি ডিসেম্বরের মধ্যে এই দুই আসনে ভোট করতে চায়। ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, ঢাকা-৫ আসন শূন্য হয়েছে গত ৬ মে। প্রথম ৯০ দিন শেষ হয় ৩ আগস্ট। পরবর্তী ৯০ দিন শেষ হবে ১ নভেম্বর। পাবনা-৪ আসন শূন্য হয়েছে গত ২ এপ্রিল। প্রথম ৯০ দিন শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। পরবর্তী ৯০ দিন শেষ হবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর। গত ১৩ জুন সিরাজগঞ্জ-১ আসনটি শূন্য হয়। শূন্য হওয়ার পরে ৯০ দিন পূর্ণ হবে ১০ সেপ্টেম্বর। আর পরবর্তী ৯০ দিন শেষ হবে আগামী ৯ ডিসেম্বর। ঢাকা-১৮ আসন শূন্য হয় গত ৯ জুলাই। শূন্য হওয়ার ৯০ দিন পূর্ণ হবে ৬ অক্টোবর। আর পরবর্তী ৯০ দিন শেষ হবে ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারি। এ ছাড়া নওগাঁ-৬ আসন শূন্য হয় ২৮ জুলাই। প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে এই আসনে ভোট হচ্ছে।

পাবনা-৪ উপনির্বাচন ২৬ সেপ্টেম্বর : পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচন হবে ২৬ সেপ্টেম্বর। এ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল শেষ হয়েছে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে। পাবনার এ উপনির্বাচন হবে ব্যালট পেপারে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। গত ২ এপ্রিল এমপি শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর মৃত্যুতে পাবনা-৪ আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরপর ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করার কথা থাকলেও মহামারীর কারণে তা সম্ভব হয়নি। তাই পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ভোট হচ্ছে।

ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ উপনির্বাচন ১৭ অক্টোবর : আগামী ১৭ অক্টোবর ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। দুই আসনে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ করবে ইসি। ভোটের এই তারিখ চূড়ান্ত করে বৃহস্পতিবার দুই আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর জানান, আগ্রহী প্রার্থীরা ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ২০ সেপ্টেম্বর যাচাই-বাছাই। আর ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে। ১৭ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ দুই আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলবে বলে জানান তিনি। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের ৪ দফায় বলা হয়েছে- সংসদের কোনো সদস্যপদ শূন্য হলে তার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তবে কোনো দৈব-দুর্বিপাকের কারণে এ নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব না হলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ভোট করতে হবে। এর আগে বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনেও প্রথম ৯০ দিনে না পারায় পরের ৯০ দিনে উপনির্বাচন করেছিল ইসি। মহামারীর মধ্যে গত ১৪ জুলাই ওই দুটি আসনে উপনির্বাচনে যশোর-৬ আসনে ভোট পড়ে ৬৩.৫ শতাংশ। আর বগুড়া-১ আসনে ভোট দিয়েছেন ৪৫.৫ শতাংশ ভোটার। এর আগে দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর ২১ মার্চ তিনটি উপনির্বাচন হয়। তখন গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ আসনে উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল যথাক্রমে ৬০ ও ৬৯ শতাংশ। অবশ্য ঢাকা-১০ আসনে ইভিএমে মাত্র ৫ শতাংশ ভোট পড়ে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর